নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে মুনিরুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ভোরের এ ঘটনার পর থেকে শনিবার পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পায়নি পরিবার। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই বলা হচ্ছে।
মুনিরুলের বাড়ি কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাঁচকাটা গ্রামে। তাঁর বাবা জাকির হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে তাদের ঘরের দরজা খুলতে বলেন চারজন। দরজা খুললে তারা ডিবি পরিচয় দিয়ে ঘরে ঢুকে মুনিরুলকে ধরে বাইরে থাকা সাদা মাইক্রোবাসের কাছে নিয়ে যান। এ সময় তারা জানান, মুনিরুলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাঁর কাছ থেকে কিছু তথ্য জেনেই ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারা সেটি না করে মুনিরুলকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটাও নিয়ে গেছেন তারা।
জাকির আরও জানান, তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন ওই চারজন। তাদের হাতে পিস্তল ও হাতকড়া ছিল। ঘটনার আগের দিন বিকেল থেকে মুনিরুলদের বাড়ির আশপাশে ও বাজারে তাদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল। এলাকার অনেকেই তাদের দেখেছেন; জাকিরও দেখেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য সমর আলীকে নিয়ে কলমাকান্দা থানায় যাই। থানার এসআই সায়েদুল ইসলামকে বিষয়টি জানাই। তবে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলেন। তিন দিন ধরে নেত্রকোনা ডিবি কার্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের খোঁজ পাইনি। শনিবার বিকেলে ডিবি অফিসে গিয়ে মুনিরুলের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাই। কিন্তু তারা বলছে, এমন কাউকে এখানে আনা হয়নি।’
ইউপি সদস্য সমর আলী জানান, মুনিরুল ফেনীর একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। এরপর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে মুফতি পাস করেন তিনি। পরে টঙ্গী এলাকার এক মাদ্রাসায় বেশ কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। রাজধানীতে ‘অধিকার’ নামের অনলাইন পোর্টালে বছরখানেক চাকরি করেছেন মুনিরুল। চাকরি ছেড়ে গত এক বছর গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন। তিনি ভালো ছেলে। অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে কী অপরাধ করেছেন, সেটা পরিবারকে জানানো দরকার। তাঁকে কোথায় নেওয়া হয়েছে, জানতে না পেরে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন স্বজন।