প্রকৃতিতে শরতের শুভ্রতার সঙ্গে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। শিশির ভেজা ভোর আর শরতের কাশফুল জানান দিচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব ঘিরে খুলনার পাইকগাছায় ১৫৫টি মন্দিরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরিতে কারিগরেরা শেষ মূহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় প্রতিমাগুলে হয়ে উঠছে অপরূপ। খড় আর কাদা মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি শেষে এখন চলছে প্রলেপ ও রঙের কাজ। একই সঙ্গে শরতের দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণভাবে সাজাতে দিনরাত মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। পাইকগাছায় ১৫৫টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। পাইকগাছার বেশ কয়েকটি পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবীদুর্গার প্রতিমা। কারিগররা প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে দেবীদুর্গা, লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৫৫টি মন্দিরে সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২০ অক্টোবর হতে দুর্গাপূজা শুরু হবে। জানা গেছে, পাইকগাছা পৌরসভায় ৬টি, হরিঢালী ইউনিয়নে ১৯টি, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১৯ টি, লতা ইউনিয়নে ১৪টি, দেলুটি ইউনিয়নে ১৫টি, সোলাদানা ইউনিয়নে ১২টি, লস্কর ইউনিয়নে ১৭টি, গদাইপুর ইউনিয়নে ৫টি, রাড়-লী ইউনিয়নে ২২টি, চাঁদখালী ইউনিয়নে ১৩টি ও গড়ইখালী ইউনিয়নে ১৩টি উপজেলায় সর্বমোট ১৫৫টি মন্দিরে দুর্গা উৎসব উদযাপিত হবে। কপিলমুনি মিলন মন্দির প্রগতি সংঘ দুর্গোৎসব পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দুর্গা প্রতিমা প্রদর্শনের আয়োজন করেছেন তারা। দুর্গাপূজাকে ঘিরে আধুনিক কপিলমনির রূপকার বিনোদ বিহারী সাধুর স্মরণে নানা আয়োজন রয়েছে এবারের পূজায়। ভাস্কর্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে তার শৈশব, শিক্ষা জীবন, ব্যবসা জীবনসহ বিনোদ থেকে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুতে পরিণত হওয়া ও তার কীর্তিকার্য সমূহ। ভাস্কর্য প্রদর্শনের মাধ্যমে রায় সাহেব বিনোদ বিহারীর সাধু জীবন পরিক্রমার চিত্র নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ আয়োজনে। আয়োজক কমিটি ধারণা করছেন খুলনা জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিমা হতে পারে এটা। কপিলমুনি পূর্বপাড়া হরিসভা পূজা মন্দির ভারতের বেলুরমঠের আদলে প্যান্ডেল নির্মাণসহ বর্ণিল সাঝে সাজিয়ে তুলেছে প্রতিমাসহ মন্দির প্রঙ্গন। উপজেলার দুর্গোৎসব সুষ্ঠ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে যাতে পালিত হয় সে ব্যাপারে সংগঠন-এর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওযা হয়েছে। শারদীয় দূর্গা উৎসব উপলক্ষে মন্দ্রিরের সভাপতি সম্পাকদের নিয়ে নিরপত্তা বিষয়ক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০ টায় পাইকগাছা থানা চত্বরে এ মত বিনিময় সভা হয়। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নিরপত্তা বিষয়ক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) সাইফুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি সমিরোণ কুমার সাধু ও সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তৃপ্তিরজ্ঞন সেন, প্রাণ কৃষ্ণ দাশ প্রমূখ।