হাজীগঞ্জে কথিত পরকিয়া প্রেমের জেরে সৌদী প্রবাসী একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। প্রবাসীর নিজ ভাড়া বাসায় কুপিয়ে মারাত্বক জখমের পর পর কথিত পরকীয়া প্রেমিক পালিয়ে যায়। গতকাল রোববার রাতে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাকরোড়ের একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার সৌদিআরব প্রবাসী মো. এমরান হোসেন (৪০) ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের দালাল বাড়ির মো. আবুল বাশারের ছেলে। তার স্ত্রী ফারজানা বেগম (৩০) হাজীগঞ্জ উপজেলার জাখনি গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে। এই দম্পতির একটি সন্তান রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ফারজানা বেগম জানান রোববার এশার নামাজের সময় আশেক তাদের বাসায় আসে। এ সময় তার স্বামীর সাথে আশেকের কথা হয়। এরপর তিনি (ফারজানা) টয়লেট যান, আমি টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখি আশেক আমার স্বামীকে কোপাঁচ্ছে। এ সময় আমি তাকে বাঁচাতে গেলে আশেক আমাকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে আমি আমার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আশেক তাকে বিরক্ত করতো বলে তিনি জানান ফারজানা।
নিহত এমরান হোসেনের বোন রিনা বেগম জানান, আমার ভাবির (ফারজানা বেগম) সাথে তার বড় বোনের চাচাতো দেবর শাহরাস্তি উপজেলার আজাগরা গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ আশেক এলাহী বাবুর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ ঘটনায় অনেক ঝামেলা ও দেন-দরবার হয়েছে। তারাই আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।
এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, তারা (ফারজানা বেগম ও সৈয়দ আশেক এলাহী বাবু) আমার ভাইকে পরিকল্পনা করে জবাই করে হত্যা করেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই, আমি মামলা করবো।
এ দিকে খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ট্রাক রোডের আমেনার বাসার ৩য় তলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার এমরান হোসেনের ভাড়া বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. গোলাম মাওলা নঈম জানান, এমরান হোসেনকে আমরা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অর্থ্যাৎ হাসপাতালে আনার পূর্বেই তিনি মারা গেছেন। দায়িত্বরত চিকিৎসকের দেওয়া তথ্য মতে ঘটনা সংশ্লিষ্ট ফারজানা নামের একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, এমরান হোসেনের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এমরান হোসেনের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন,এ ঘটনায় হত্যা মামলা রুজু হয়েছে এবং খুনিকে ধরতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।