কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে দেশের বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়ে গেছে। কোথাও কোথাও লোকালয়ে পানি ঢুকে ডুবে গেছে ফসলি মাঠ। ভেসে গেছে খামারের মাছ। এরমধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকা। ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এনায়েতপুর, কালাদহ, ভবানীপুর, নওগাঁও, পটিজানা এলাকার ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। প্রায় ৭০ হেক্টর জমির সবজি ,কলা, পেঁপে, আনারস বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। তাদের দাবি, তলিয়ে যাওয়া ১হাজার ৪৬৫ হেক্টর আমন ক্ষেত থেকে প্রায় ৭হাজার ৩২৫ টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা। যার মূল্য ২০ থেকে ২২ কোটি টাকা। উপজেলা মৎস্য অফিসের দাবি, ১৩ টি ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ শতাংশ পুকুর। খামার তলিয়ে প্রায় কয়েক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। শনিবার এনায়েতপুর ও রাঙ্গামাটিয়া, নাওগাঁ ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছেন ঋঘঝ২৪ প্রতিবেদক। এনায়েতপুরের সাবেক ইউপি সদস্য রজব আলীর সোয়াইত বিল এবং শুকনা বিলে ৩৭ একর জমিতে ছয়টি মাছের খামার তলিয়ে কোটি টাকার বেশি মাছ ভেসে গেছে। নাওগাঁওয়ের বাদিহাটি গ্রামের মৎস্য চাষী হাবিবুর রহমান, আবদুল খালেক ও সেলিম রেজার কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। সাবেক ইউপি সদস্য রজব আলী বলেন, আমি ব্যাংক ঋণ নিয়ে দুটি বিলের ৩৭ একর জমি ইজারা নিয়ে ছয়টি খামারে মাছ চাষ করেছি। সর্বনাশা বৃষ্টি আমার ছয়টি খামারের এক থেকে দেড় কেজি ওজনের পাঙ্গাস সহ দেশীয় টনকে টন মাছ ভেসে গেছে। কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। রাঙ্গামাটিয়া ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, 'আমি দুই একর জমিতে দুটি খামারে মাছ চাষ করে সংসার চালাই। এবারের টানা বর্ষণে আমার দুটি খামার তলিয়ে সব মাছ ভেসে গেছে। রাতারাতি পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক চেষ্টা করেও ফেরাতে পারিনি।'এমন টানা বৃষ্টি ২৫ বছরেরও দেখেননি বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষী হাবিবুর রহমান। ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের ভাষ্য, পানিতে তলিয়ে যাওয়া রুপা আমনের থোর ধানগুলো ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এর মধ্যে যদি পানি কমে যায়, তাহলে হয়তো কিছু ধান রক্ষা পাবে, তা না হলে সব ধান পচে যাবে।