নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিভিন্ন এলাকায় বৈধ ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে অনেক বেকারী কারখানা। ওই সমস্ত গড়ে ওঠা অসংখ্য বেকারি কারখানাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে তাদের তৈরী বেকারী পণ্যে মেশানো হচ্ছে নানা ধরনের ক্ষতিকর ক্যামিকেল, কাপড় এবং কাঠে ব্যবহৃত বিষাক্ত রং। নানা ধরণের কেমিক্যাল, কাপড় ও কাঠে ব্যবহৃত রং মিশিয়ে দিনের পর দিন তৈরি করে আসছে বেকারি পণ্য খাবার। ভোক্তাদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে বেকারিগুলোতে গিয়ে দেখা যায় খাবারে রং মেশানোর দৃশ্য। ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকটি বেকারি কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান না থাকায় বর্তমানে বেকারি মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা অনেকটা প্রকাশ্যে ভেজাল সামগ্রী তৈরী করে তা বাজারজাত করছে। অনেকে আবার শো-রুমের মাধ্যমে তা বিক্রি করছে। শুধু রং আর কেমিক্যাল ব্যবহার করছে না। কয়েকদিনের পোড়া ভেজাল তেল এবং অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে বেকারি কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল বিভিন্ন শিশু খাবার সামগ্রী। স্থানীয়রা বলছে ভেজাল তেল ও কড়াইয়ে জমে থাকা সেই পোড়া তেল এবং চিনিযুক্ত নষ্ট তেলও বেকারি খাবারে মেশানো হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা থেকে নামমাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী পণ্য উৎপাদন করলেও বেশিরভাগ বেকারি মালিক কোন লাইসেন্স বা বিএসটিআই এর অনুমোদন না নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসা। বেকারি পণ্যগুলোর মেয়াদ নির্ধারিত নিময়নীতি তোয়াক্কা না করেই মনগড়া সীল বানিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও অনুমোদনহীন মনোগ্রাম তারা ব্যবহার করছে। এ ছাড়া উৎপাদনের পর ২ থেকে ৩ দিন দোকানে রাখা পঁচে যাওয়া পণ্যগুলো তারা চুলায় শুকিয়ে আবার খাদ্যে ব্যবহার করছে। অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশ ও রং মিশিয়ে খাদ্য উৎপাদনের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাশার বলেন বেকারি পণ্যে রং মিশিয়ে ও অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি পেটে, খাদ্য নালিতে, লিভারসহ বিভিন্ন অংশে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই কথা বলেন সৈয়দপুর ১’শ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আবদুর রহিম। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এসব খাবার বেশি ক্ষতিকর। তাই সবার উচিত ভেজাল খাবার পরিহার করা। ভেজাল বিরোধী অভিযান না থাকায় বেকারি ব্যবসায়িরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। দায়িত্বে থাকা এক সরকারী কর্মকর্তা বলেন ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে তাছাড়া নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে অভিযান চালাব। ইতঃপূর্বে বেশকিছু বেকারি কারখানায় অভিযান চালিয়ে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে শতর্ক করে দেয়া হয়েছে ভেজাল পণ্য উৎপাদন বন্ধের। এরপরও যদি তারা ভেজাল পণ্য উৎপাদন করে থাকে তাহলে অভিযানের মাধ্যমে ওই সকল কারখানা সীলগালা করে দেয়া হবে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরি এবং খাবারে ভেজাল মেশানোর বিষয়ে উপজেলা স্যনিটারী ইন্সপেক্টর ও খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছে।