আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালে সাময়িক বরখাস্ত খুলনার পাইকগাছায় লতা ইউপি চেয়ারম্যানের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। রোববার সকালে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পুলকেশ রায়। প্রধান অতিথি ছিলেন দায়িত্ব পাওয়া চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কালিপদ বিশ্বাস, ইউপি সদস্য আজিজুল বিশ্বাস, বিজন কুমার হালদার, মঙ্গল চন্দ্র মন্ডল, কুমারেশ মন্ডল, বিনতা রাণী বিশ্বাস, রিনা পারভীন, তপন কুমার রায়, প্রকাশ চন্দ্র টুকু ও কাকলি রানী মন্ডল। গত ১১ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বরখন্তাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে এমন খবরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাজল কান্তি বিশ্বাস অনুসারীরা উল্লাস প্রকাশ করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ২০ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান স্বাক্ষরিত এক পত্রে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। যার স্মারক নং-৪৬. ০০. ৪৭০০. ০১৭. ২৭. ০০২. ২০-৫৭৬। পত্রে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাইকগাছা, খুলনার প্রতিবেদন ও অফিসার ইনচার্জ, পাইকগাছা থানার প্রেরিত বার্তায় দেখা যায় যে, কে বা কারা ওই চেয়ারম্যানের একটি ভিডিও কল বিচ্ছিন্নভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকে এ ধরনের কর্মকা-ে জড়িত হওয়া নৈতিকতা ও ওই পদের জন্য অবমাননাকর প্রতীয়মান হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক খুলনা, ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারীশ করেন। একই সাথে ২০ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার পত্রের বরাদ জেলা প্রশাসক ঐদিন ৪৬০০. ৪৭০০. ০১৭. ২৭. ০০২. ২০-৫৭৭ নং স্মারকে এ বিষয়ে কাজল কান্তি বিশ্বাসকে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য পত্র প্রেরণ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে কাজল কান্তি বিশ্বাস জেলা প্রশাসক খুলনা বরাবর গত ২ জুলাই কারণ দর্শানোর জবাবের একটি কপি ফের সামাজিক যোযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, গত ২০১১ থেকে ১৬ পর্যন্ত ৫ বছর সুনামের সাথে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ফের ২০২১ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন বলে উল্লেখ করে তার কৃতকর্ম ঢাকতে মেডিকেল সাইন্সের উদ্ধৃতি দেন। যা নিয়ে নিজ ইউনিয়ন লতার পাশাপাশি উপজেলাময় নতুন সমালোচনার জন্ম দেয়। জবাবের একাংশে তিনি ৭৫ শতকরা পুরুষ ও ৪২ শতকরা নারীকে হস্তমৈথুনকারী হিসেবে উল্লেখপূর্বক যা, মানব জীবনযাপন প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক অংশ বিশেষ দাবি করেন। এমনকি এটা কোন বেআইনি বা অনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যে পড়েনা এবং প্রাকৃতিক কর্মকান্ডের অন্তর্ভূক্ত বলে উল্লেখপূর্বক তার কৃতকর্মকান্ডটি বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৪ এর ২৯৪ ধারায় অনৈতিক অশ্লীলতার বর্ণনায় পড়ে না। এমনকি দন্ডবিধির অন্য কোন ধারায় অনৈতিক অশ্ললিতার কোন বর্ণনা নেই। জবাবে আরো বলা হয়, তিনি তার ঘরের মধ্যে বসে একান্ত পরিবেশে কর্মটি করেন। যা কতিপয় নষ্ট চরিত্রের মানুষ ও তার শত্রুরা গোপণে ছবি তুলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছেড়ে অপরাধ করেছে দাবি করেন। ফলে তার সম্মান সুখ্যাতি নষ্ট হয়েছে। এহেন কাজের জন্য তিনি দু:খ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে আগামীতে তিনি এমন কর্মকা- করবেননা বলে প্রতিশ্রুতিপূর্বক তার উপর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন। সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২৩’ খুলনা জেলা প্রশাসকের ৫৬৬নং স্মারকের মতামতপত্রে বলা হয়, এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তাই তিনি প্রচলিত আইন অনুয়ায়ী তিনি ইচ্ছাকৃত কোন ফৌজদারী অপরাধ করেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান স্বাক্ষরিত ৪৬. ০০. ৪৭০০. ০১৭. ২৭. ০০২. ২০-৫৭৬ স্মারকে ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশটি প্রত্যাহার করা হয়।