ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন দুই সংসদ সদস্য। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকারী প্রতিষ্ঠান সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১২) সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম প্রকাশ্য সভায় ভোট চেয়েছেন। ভোট চেয়েছেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি ও সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরও। তাই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠেছে ওই দুই এমপি’র বিরূদ্ধে। বিশেষ কর্মী প্রচার করলেও বাস্তবে ছিল নির্বাচনী সভা। দাওয়াত দিয়ে নিয়েও গণমাধ্যম কর্মীদের বসতে দেননি আয়োজকরা। পরে সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে যান তারা। সরজমিন, দলীয় ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল সদরের সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজন করেন সভার। গত ৩-৪ দিন ধরে পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন বিহীন ইউনিয়ন কমিটিসহ গোটা সরাইলে চলছে সভার প্রচার প্রচারণা। বিকাল ৪টার পর থেকেই ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের আ.লীগের নেতা কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন উপজেলা সদরে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মটরবাইক শোভাযাত্রা সহকারে সরকারী গাড়িতে চড়ে পুলিশ প্রটেকশনে সভাস্থলে হাজির হন দুই এমপি। সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের এমপি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন- সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাবেক মেয়র হেলাল উদ্দিন, ১৪ দলের সমন্বয়ক হাজী মো. হেলাল উদ্দীন, জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, আ.লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কামরূজ্জামান আনসারী, আবদুল হান্নান রতন, আ.লীগ নেতা মো.মনির হোসেন, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, আ.লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুর রাশেদ, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. লোকমান হোসেন, আ.লীগ নেতা এড. জয়নাল উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এড. আশরাফ উদ্দিন মন্তু, সাবেক সম্পাদক শের আলম মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, ইউপি চেয়ারম্যান খায়রূল হুদা চৌধুরী বাদল ও মোছা: আছমা বেগম। প্রধান অতিথি বলেন, আপনারা দীর্ঘদিন ধরে সরাইল-আশুগঞ্জে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেই। তাই আপনারা উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আপনাদের সকলের কথা শুনেছেন। তিনি কথা রেখেছেন। নৌকা দিয়েছেন। এই নৌকা হক ভাষানীর নৌকা। সোহরাওয়ার্দীর নৌকা। বঙ্গবন্ধুর নৌকা। শেখ হাসিনার নৌকা। সকল সাধারণ মানুষের নৌকা। ৫ তারিখের উপনির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনা ও নৌকা মার্কার ইজ্জত রক্ষা করূন। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য সকলের কাছে অনুরোধ করেছেন মহিলা এমপি উম্ম ফাতেমা নাজমা বেগম। এ বিষয়ে র.আ.ম মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি দলের সভাপতি হিসেবে নৌকার পক্ষে কী ভোট চাইতে পারব না? আমি মনে করি এটা আচরণবিধি লঙ্গনের পর্যায়ে পড়ে না। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম বলেন, প্রতীক বরাদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত কোন প্রার্থী ও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনী সভা সমাবেশ করতে পারেন না। অভিযোগ পেলে যথাযথ ভাবে আইনগত ব্যবস্থা নিব।