চরমহয়রানি ও অনিয়মের পাশাপাশি কর্মচারীদের ঘুষ লেনদেনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিস। জাতীয পরিচয়পত্র সংত্রান্ত কাজে গেলেই হতে হয়ভোগান্তির শিকার। অফিসের কর্মচারীদের খারাপ ব্যবহারে মানুষ অতিষ্ঠ বলে অভিযোগ। বিভিন্ন কাজের সংশোধনীর বিভিন্ন ক্যাটাগরির শত শত ফাইল ফাইল তদন্তের অভাবে ঝুলে আছে। অনেকে দ্রুত প্রতিকার চাইতে গেলে দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে ভুক্তভোগিদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করছে। বুধবার অফিস সহায়ক মোঃ খোকনের কাছে ৫০০ টাকা দিয়ে স্মাট কাট গ্রহন করতে হয়েছে। এদিকে ৫০০ টাকা দেওয়ার সময় গোপনে মোবাইল ফোনে নোট গুলোর ছবি ও টাকা দেওয়ার ভিডিও ধারণ করে করেন। কালীগঞ্জ নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, হারানো বা স্থানান্তরের আবেদন মানেই টাকা। চাহিদামতো টাকা না দিলে হয়রানি হতে হয়। এসব টাকা আদায় করছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ খোকন। নির্বাচন অফিসের ঘুষখোর এই কর্মচারী অফিস ভবনের দোতলার বারান্দায় চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে সিগারেটের প্যাকেট ও গ্যাস লাইট নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। অফিসের বারান্দায় বসে প্রকাধ্যে ধুমপান করেন। অফিসটিতে নানা কাজে আসা সাধারণ মানুষকে তিনি তাদের কাজ করে দেবেন মর্মে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করে থাকেন। টাকা না দিলে ভোগান্তির শেষ নাই। দীর্ঘদিন তিনি প্রকাশ্যে এভাবে মানুষের নিকট থেকে ঘুষ গ্রহন করেন বড় কর্মকর্তার নাম করে। বলে থাকেন স্যারকে টাকা দিতে হবে। একজন ভুক্তভোগী ১৮ অক্টোবর নির্বাচন অফিসে নিজের পরিচয় পত্রের স্মার্ট কার্ডটি নিতে আসলে নির্বাচন অফিসের দোতালায় উঠলে কথা হয় অফিস সহায়ক খোকনের সাথে। তাকে স্মার্ট কার্ডের কথা বলতেই স্লিপ আছে কিনা জানতে চান তিনি। স্লিপটি না থাকার কথা শুনে স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করা লাগবে বলে সাথে সাথে ভুক্তভোগীর নিকট ৫ শত টাকা চান। ভুক্তভোগী ৫ শত টাকার একটি নোট রশিদ ছাড়াই তাকে প্রদান করেন। তিনি অনলাইনে আবেদন ব্যতীত ভবনের নিচতলার গোডাউনে (যেখানে আইডি কার্ড ও স্মার্ট কার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষিত থাকে) প্রবেশ করেন মুখের জ¦লন্ত সিগারেট নিয়ে। তিনি ধূমপানরত অবস্থায় স্মার্ট কার্ড টি খুঁজে বের করে হাতে ধরিয়ে দেয়। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীদের বলেন যে কোনো কাজের ব্যাপারে আসলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে কাজ হয়ে যাবে। অফিসে গোডাউনের মধ্যে প্রকাশ্যে ধূমপান ও ঘুষ গ্রহনের ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ খোকনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিড়ি খায় এটা সত্যি কথা। এখন আপনারা ভাই ভাগার মানুষ যদি এমন করেন তাহলে কিভাবে হবে বলেন। আর অনলাইনে আবেদন করা লাগেনা এটা আমার জানা নেই। যে কারণে টাকা নিয়ে থাকি আবেদনের জন্য। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রশিদুল আলম বলেন, এনআইডি তথা স্মার্ট কার্ড নিতে কোন টাকা লাগেনা। পূর্বে অনলাইনে আবেদনের জন্য ফি লাগতো বর্তমানে সেটিও লাগেনা। তবে অফিস সহায়ক যদি স্মার্ট কার্ড দেওয়ার কথা বলে টাকা নেই এবং প্রকশ্যে ধূমপান করে থাকেন তাহলে অবশ্যই এ ধরনের কাজগুলো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমি প্রথমে তাকে সতর্ক করবো এবং প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করব।