রাজধানীতে কোনো কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে না নগরবাসীর। পানি আর গ্যাস সংকটে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ঘটেছে। দিনভর দেখা মেলে না গ্যাস ও পানির। বাইরে থেকে মিনা রেল ওয়াটার কিনে অনেকে গৃহস্থালির কাজকর্ম সারছেন অথবা একী ভাবে বাইরের হোটেল কিনবা রেষ্টুরেন্ট থেকে অনেক সময় খাবার কিনে এ খাচ্ছেন। অনেক এলাকায় পানি সংকটের কারণে দিনের বেলায় গোসল বা বাথরুমে যাওয়া যায় না। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস পানি সংকট। আবার অনেক এলাকায় পানির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও পানিতে রয়েছে শ্যাওলার গন্ধ। পানির সঙ্গে আসছে ময়লাও। অনেক পাম্পে কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, পানির লাইন উঁচু-নিচু হওয়া, সুয়ারেজ লাইনে সমস্যাসহ নানা কারণেই পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। পানির এমন তীব্র সংকট দেখা দিলেও সমাধানে ওয়াসা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। তাই কেউ কেউ মিনারেল ওয়াটার কিনে পানির আপাত সমস্যা সমাধান করলেও অনেকেই সিলিন্ডারের এলপিজি গ্যাস দিয়ে রান্নার কাজ করছেন। গ্যাস না পেলেও প্রতি মাসে গ্যাস বাবদ বিল তাদের গুনতে হচ্ছে ঠিকই। এতে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবন চালানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও গ্যাস সংকটে একদিকে যেমন নতুন শিল্প কারখানাগুলো দাঁড়াতে পারছে না, অন্যদিকে গ্যাসের অভাবে বন্ধ হতে চলেছে উৎপাদনমুখী কল কারখানাগুলো। গ্যাস সংকটের কারণে কল কারখানার উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উৎপাদন ঘাটতির পাশাপাশি অবৈধ সংযোগ ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে রাজধানীতে গ্যাস সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। গ্রাহক চাহিদা পূরণ করতে পারছে না গ্যাস কোম্পানি। গ্যাস নিয়ে চরম বিপাকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা। গ্রাহক চাহিদা পূরণ করতে পারছে না তিতাস। নিরাপদ পানি ও গ্যাস নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের সার্বিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আমাদের মাঝে অপচয়ের বিরুদ্ধে নৈতিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। পানি ও গ্যাসের অপচয় এবং অবৈধ সংযোগ বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া গেলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হতে পারে। ফলে দেশের শিল্পকারখানার কথা বিবেচনা করে হলেও এ সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তাই রাজধানী সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের আহ্বান করবো, এ ধরনের বিপর্যয় রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হোক।