সারিয়াকান্দিতে সম্প্রতি রোগাক্রান্ত গরুর মাংসের ছড়াছড়ি হয়েছে। পৌর এলাকা সহ উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। কিছু কসাই নির্দিষ্ট স্থান ও দিনের আলোর পরিবর্তে ভোর রাতে এবং এসব গরু জবাই করে থাকেন। গরু-ছাগলের স্বাহ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র এভাবে করা হচ্ছে জবাই। এমনকি মরা গরুর লোক চক্ষুর অন্তরালে মরা গরুর মাংস বিক্রি করেও কসাইরা পগার পার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাটে বাজারে গরু-ছাগলের মাংস বিক্রির প্রথা বহু দিনের। কিন্তু ইদানীং এ মাংস বিক্রিতে সাধারন ক্রেতাদের মনে সন্দেহ ও জল্পনা-কল্পনা উদয় হয়েছে। জানা যায়, ফুলবাড়ি হাটে গরু জবাই করে ৩ জন কসাই। এছাড়াও নারচী, হাটশেরপুর, কড়িতলা, কুতুবপুর, জোড়গাছা, পৌর হাট-বাজার, ছাগলধরা, মথুরা পাড়া রামচন্দ্রপুর, বলাইল ও গনকপাড়া, হাসনাপাড়া বাজারেও গরুর মাংস বিক্রি হয় অনবরত। ওই সব এলাকার মোট কসাই সংখ্যা হল ৪২ জন। এসব কসাইয়ের কেউ কেউ নির্দিষ্ট স্থানে গরু জবাই না করে। অন্য স্হানে জবাই করার পর বাজারে মাংস সরবরাহ করে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন হাটে-বাজারে অধিক লাভের আশায় কসাইরা মরা গরুর মাংস বিক্রি করে থাকেন। জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার কাটাখালি গ্রামের কসাই পিপলু আকন্দ (৩৮) ফেলে দেওয়া মরা গরুর মাংস কেটে এনে ছাগলধরা বাজারে বিক্রি করেন। এই পিপলু ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কাটাখালি গ্রামের মৃত হারেছ আকন্দের ছেলে। পিপলু সকাল থেকে মাংস বিক্রি করার পর বিকালে মরা গরুর মাংস বিক্রির খবর প্রকাশ পায়। পরে সে এলাকা থেকে লাপাওা হন। কসাইয়রা গরু জবাই করেন দিনের আলোর পরিবর্তে ভোর রাতের লোকবিহীন সময়ে। এসব গরু জবাইয়ের পূর্বে স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিধি বিধান থাকলেও মানতে চাননা কেউই। আবার কোনো কোনো কসাইয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ছাড়পত্র থাকলেও তা জবাইয়ের ২ থেকে ১ দিন আগে নেওয়া। পল্লী চিকিৎসকরা গরু না দেখেই এ ধরনের সার্টিফিকেট দিয়ে থাকেন। পৌর এলাকার কসাই দুলাল মাংস ঘরের দেলোয়ার বলেন, আমরা সদা সর্বদা ভালো-সুস্থ, সবল গরু জবাই করে থাকি। ব্যবসার সুনাম আমরা কখনোই ক্ষুন্ন করতে চায় না। সুনাম রক্ষা করতে যা যা করা দরকার তাই করি। এ ব্যাপারে পৌর এলাকার গরুর চিকিৎসক মতির সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, আমি তো অসুস্থ। নিজেই বিছানা থেকে উঠতে পারছিনা। সুস্থ সবল গরু কথা বলে কসাইয়েরা আমার কাছ থেকে সার্টিফিকেট স্বাক্ষর করে নিয়ে যান। তবে সুস্থ সবল গরু জবাই করা তাদের দায়িত্ব কর্তব্য। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃশাহ আলম বলেন, গরু কখন কোথায় কিভাবে জবাই হয়, তা আমাদেরকে জানানো হয় না। যদি এধরনের রোগাক্রান্ত গরুর জবাইয়ের খবর পান, তবে আমাদেরকে খবর দিবেন। একবার একজনকে আইনের আওতায় আনলেই এর প্রবণতা কমে যাবে।