অবশেষে লাশ উদ্ধারের একদিন পরই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর মডেল থানার খাঁটিহাতা গ্রামের চাঞ্চল্যকর শিশু শিক্ষার্থী সাব্বির (০৯) হত্যার রহস্য উৎঘাটন করেছেন পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘটনার মূল হোতা মাছুম ও রূবেলকে। সাব্বিরকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্যেশ্যে পুকুরের কুচুরি ফানার নিচে রাখার দায় স্বীকার করেছে আসামি মাছুম। মুক্তিপণের টাকার জন্যই তারা সাব্বিরকে অপরহরণ ও হত্যা করেছে। চিরকূটে লেখা নম্বর ব্যবহারের মুঠোফোন সেটটিও জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, খাঁটিহাতা গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে মাছুম ও রূবেল। একই গ্রামের বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক শুক্কুর আলীর ছেলে সরফত আলী। আর সরফত আলীর শিশুপুত্র সাব্বির। ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে সাব্বির দ্বিতীয়। গ্রামের একটি প্রাইভেট স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত সাব্বির। গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে মাছুম গংরা অপহরণ করে সাব্বিরকে। প্রথমে চিরকূট লিখে ও পরে শিশু সাব্বিরের মায়ের কাছে মুঠোফোনে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। অপহরণের ৪ দিন পর গত শনিবার সরফত আলীর বাড়ির উত্তর পাশের পুকুর পাড়ে মিলে শিশু সাব্বিরের লাশ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে রহস্য উৎঘাটনে মাঠে নেমে পড়েন। থানা পুলিশের সাথে অনুসন্ধানে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশও। শনিবার রাতেই সদর মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মাছুম ও তফাজ্জল নামের দুই যুবককে আটক করেন। রহস্য উৎঘাটনে তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যায় পুলিশ। সোমবার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে মাছুম বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। মাছুমসহ অন্য আসামিরা একে অপরের যোগসাজসে ওইদির রাতে সাব্বিরকে অপহরণ করে সরফত আলীর বাড়ির উত্তর পাশের বিলের মধ্যে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে তারা গুম করার উদ্যেশ্যে পুকুরের কুচুরিফানার নিচে সাব্বিরের লাশ ফুঁতে রাখে। মাছুমের দেওয়া তথ্য অনুসারে সোমবার বিকালে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম বুধল ইউনিয়নের তেলিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার আরেক আসামি মাছুমের ছোট ভাই রূবেলকে গ্রেপ্তার করেছেন। রূবেলের ব্যবহৃত মুঠোফোন সেটে চিরকূটে দেওয়া নম্বরের সীমটি পাওয়া গেছে। তাই তার কাছ থেকে মুঠোফোন সেটটি জব্দ করা হয়েছে। রূবেলকে আগামীকাল (মঙ্গলবার) আদালতে হাজির করা হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় ঘটনার রহস্য উৎঘাটনে আমরা থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা কাজ করছিলাম। আল্লাহর চাহেতু স্বল্প সময়ের মধ্যে রহস্য উৎঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। অন্য আসামীদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। সকল আসামি দ্রƒতই গ্রেপ্তার হবে।প্রসঙ্গত: গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশের দোকান থেকে মজা ক্রয় করতে আর বাড়ি ফিরেনি শিশু সাব্বির। পরের দিনই চিরকূট লিখে ২ লাখ মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। গত শনিবার বাড়ির উত্তর পাশে পুকুর পাড়ে মিলে শিশু সাব্বিরের লাশ।