বগুড়ায় গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) নিজ শয়নকক্ষের সোফায় মৃত অবস্থায় পরে ছিল আশা দেবী। পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার রাত ১১ পূজা মন্ডপের দায়িত্ব পালন শেষ করে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে আশা দেবী এই সময় আশা দেবী ছাড়া পরিবারের সদস্যরা সবাই পূজা উদযাপনের জন্য পূজা মন্ডপে ছিল রাত ১২ টায় পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ফিরে এসে আশার শয়নকক্ষের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। পরিবারের সদস্যরা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে কোন সাড়া না পেয়ে পিছনের দরজা দিয়ে শয়নকক্ষে প্রবেশ করে আশা দেবীকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এটা একটা ক্লুলেস হত্যাকান্ড হওয়াই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটনের জন্য কাজ করতে থাকে এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করে শিবগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকা-ে সাথে জড়িত একমাত্র আসামি নয়ন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া নয়ন শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া এলাকার রমজান আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নয়ন ইসলামের গ্রেপ্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, আশা দেবী এবং অভিযুক্ত নয়ন প্রতিবেশী। প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে আশা দেবীর সাথে অভিযুক্ত নয়ন এর মাঝে মধ্যেই দেখা সাক্ষাৎ ও কথাবার্তা হতো। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এভাবে চলাকালে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়। এর মধ্যে গত তিন মাস আগে নয়ন অন্য একজন নারীকে বিয়ে করে। তারপর থেকে আশা দেবীর সাথে আসামি নয়ন মেলামেশা করা বন্ধ করে দেয় এটি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্দ তৈরী হয়। তখন অভিযুক্ত নয়ন আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে নয়ন ওত পেতে থাকেন। এর মধ্যে মন্দির থেকে পোশাক পরিবর্তন করার জন্য নিজ বাড়ীতে যাওয়ার পথে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের তারা পাম্পের গেটের সামনে আশা দেবীর সাথে নয়নের দেখা হয়। আশা দেবী তার বাড়ির দিকে রওনা দিলে অভিযুক্ত নয়নও আশা দেবীর পিছে পিছে তার বাড়ির দিকে যায়। একপর্যায়ে আশা দেবী বাড়িতে প্রবেশ করে মেইন গেইট বন্ধ করে দেয়। ওই সময় আশা দেবীর বাড়িতে কেউ ছিল না। সবাই পূজা মন্ডপে ছিল। সেই সুযোগ বুঝে অভিযুক্ত নয়ন আশা দেবীর বাড়ির পিছনের ইটের প্রাচীর টপকিয়ে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে আশা দেবীর শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। তখন পূজায় যাওয়ার জন্য আশা দেবী তার পরিহিত আনসার ভিডিপি’র পোষাক চেঞ্জ করছিল। অভিযুক্ত নয়নকে আশা দেবীর শয়ন ঘরে দেখে আশা দেবী রাগ করে। পরে অভিযুক্ত নয়ন আশা দেবীকে ফুসলিয়ে আশা দেবীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক করে। এরপর নয়ন তার পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক আশা দেবীর নাক মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গোলাই ওড়না পেচিয়ে আশা দেবীর মৃতদেহ সোফার উপর রেখে অভিযুক্ত নয়ন বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত আসামি নয়ন ইসলাম ১৬৪ ধারায় আশা দেবী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।