সমাজ থেকে মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, নকল মুক্তিযোদ্ধা, দুর্নীতিবাজ, সকল প্রকার অসঙ্গতি-অনিয়ম, উৎখাত করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও সোনার বাংলার সুফল জনগণ পাবে। শুক্রবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনদিনের কর্মসূচি শেষে ‘বাংলাদেশ সুরক্ষা’ বিষয়ক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিকেল ৩টায় প্রজন্ম চত্ত্বর শাহবাগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মেহেদি হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম, সংবিধান প্রণেতা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, ভাষা সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ পিন্টু, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদের চেয়ারম্যান এ.বি সিদ্দিক মোল্লা, সংগঠনের সিনিয়র সদস্য গোলাম রাব্বানী হিরু ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত পরিবারের সদস্যরা বক্তৃতা করেন। বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রথম দফা ১৯৯৬ সালে ও পরে ২০০৯ সালে দেশের হাল ধরায় বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তি পায় এবং সর্বস্তরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়। দেশের জন্য, মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মনে রাখতে হবে ষড়যন্ত্রকারীরা চুপ করে বসে নেই। দেশকে আবারও অন্ধকার পথে ঠেলে দেয়ার নানা চক্রান্তে লিপ্ত একটি গোষ্ঠি। বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দেশ থেকে সবধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসঙ্গতিগুলো দূর করতে হবে। নইলে সরকারের সব অর্জন ধুলিস্মাৎ হয়ে যাবে। বক্তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধী ও তাদের প্রজন্ম এবং নকল মুক্তিযোদ্ধাদের মনোনয়ন না দেয়া, চাকুরিতে নিয়োগ প্রদানে ৮০% আঞ্চলিক তথা জেলা কোটা (৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা সহ) বাস্তবায়নের প্রসঙ্গটি সবদলের নির্বাচনী ইশতেহারে সন্নিবেশিত করা, গণহত্যার তালিকা প্রণয়ন, বঙ্গবন্ধুর শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সব অনিয়ম-দুর্নীতি দূরীকরণ, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পাঠ্যপুস্তক কারিকুলামে অন্তর্ভূক্তকরণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স) নিশ্চিতে রুলস অব বিজনেস সংশোধন করাসহ সাত দফা দাবী বাস্তবায়নে দাবি জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পক্ষ থেকে এসব দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সহকারি প্রোগ্রামার সাবের জুয়েল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা, সংগঠনের নেতা শেখ নজরুল ইসলাম, কামরুল হাসান চৌধুরী বিপু, জান-ই-মারজানা ও আবদুল হাকিম তানভীরের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। চাকুরির কোটা বিষয়ে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আপনার সরকারের আমলে কোটা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান লঙ্ঘন ও আদালতের রায় বাস্তবায়ন না হওয়া অত্যন্ত দুঃখ ও কলঙ্কজনক। আমরা বঙ্গবন্ধু সরকার ঘোষিত ৮০% শতাংশ আঞ্চলিক তথা জেলা এবং ২০ শতাংশ মেধা অর্থাৎ সাধারণ কোটা বাস্তবায়নে আপনার সুদৃষ্টিসহ বলিষ্ঠ ভূমিকা কামনা করছি। স্মারকলিপিতে সংগঠনের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা স্বাক্ষর করেন।