মোহাম্মদ নাওয়াজের লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি পুল করেই যেন এর গন্তব্য বুঝে গেলেন কেশব মহারাজ। দুই হাত আকাশপানে তুলে দিলেন হুঙ্কার। ব্যাট ফেলে বুকে থাবা দিলেন বেশ কয়েকবার। পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ের পর এমন উচ্ছ্বাসেই মাতলেন দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার। পরে জানালেন, এমন মুহূর্তের স্বপ্নই দেখেন তিনি। চেন্নাইয়ে শুক্রবার পাকিস্তানকে স্রফে ১ উইকেটে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ জেতানো শেষ শটটি খেলেন নয় নম্বরে নামা মহারাজ। মূল দায়িত্ব বোলিং হলেও এদিন ব্যাট হাতে দৃঢ় প্রদর্শনিতে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ১ উইকেটের জয় এনে দেন তিনি। অথচ একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ব্যাটিংয়ে নামতে হবে না মহারাজের। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৮০ বলে স্রফে ৩৬ রান করতে হতো প্রোটিয়াদের। উইকেটে তখনও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো এইডেন মার্করাম। সেখান থেকে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের চিত্রনাট্য অনেকটাই বদলে দেয় পাকিস্তান। দলের জয় থেকে ২১ রান দূরে থাকতে ড্রেসিং রুমে ফেরেন মার্করাম। একইসঙ্গে আউট হন জেরাল্ড কুটসিয়াও। ফলে শেষ ২ উইকেটের ওপর পড়ে দল জেতানোর দায়িত্ব। প্রথমে লুঙ্গি এনগিডির সঙ্গে ১০ রানের জুটি ও পরে তাবরাইজ শামসির সঙ্গে মিলে বাকি ১১ রান নেন মহারাজ। একপ্রান্তে স্থির দাঁড়িয়ে থেকে ২১ বলে ৭ রান করেন ৩৩ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার। পরে ম্যাচ জেতানো শট খেলে তিনি মাতেন বাধনহারা উল্লাসে। ম্যাচ শেষে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ওই মুহূর্তের অনুভূতি ব্যক্ত করেন মহারাজ। “আমার মনে হয়, এটি পরাবাস্তব মুহূর্ত ছিল। আপনি সবসময় নিজ দেশের হয়ে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দেখেন। তবে বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতা... এটি খুবই স্পেশাল। টুর্নামেন্টে আমি এসব মুহূর্তের জন্যই আপনি অপেক্ষা করেন, নিজেকে তৈরি করেন।” “আমার জন্য সেটি (ম্যাচ জেতানো শট খেলা) বিশেষ মুহূর্তগুলোর একটি ছিল। আমি জানি, দলের জন্য এই জয় কত বড়। আমার মনে হয়, এই কারণে আবেগের মাত্রা খুব বেশি ছিল।” শেষের ওই শট খেলার সময় অনেক ভাবনার ভিড়ে সঠিক কাজটি করতে পারায় নিজেকে ভাগ্যবান মানছেন মহারাজ। “সত্যি বলতে আমার মাথায় তখন অনেক চিন্তা-ভাবনা ঘুরছিল। আমি শুধু বল দেখছিলাম। আমি সৌভাগ্যবান যে এমন অবস্থানে ছিলাম, যেখান থেকে রান করতে পারতাম এবং খালি জায়গায় (শেষ) বলটি পাঠাতে পারতাম।” ১ উইকেটের এই জয়ে ছয় ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী বুধবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচ খেলবে তারা।