আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাবনা- ২ (সুজানগর-বেড়া) আসনে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ ব্যাপকভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন আগামী জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকে এ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় তাদের প্রার্থিতা জানান দিতে পোস্টার এবং বিলবোর্ড টাঙ্গানোর পাশাপাশি ব্যাপকভাবে গণসংযোগ করছেন। পাশাপাশি তারা দলীয় মনোনয়ন পেতে দলের হাই কমান্ডের সাথে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা অত্যন্ত সরব হলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিরব। বিএনপি যেহেতু দলীয় সরকারের অধীনে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছে সেহেতু এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা গণসংযোগ এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা থেকে দূরে রয়েছেন। তবে আসনটিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলেরই রয়েছে শক্ত ঘাঁটি। বিগত নির্বাচন গুলোর ফলাফল অনুযায়ী আসনটি থেকে ৬বার আওয়ামী লীগ, ৪বার বিএনপি এবং একবার জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী সংসদ নির্বাচিত হন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দল আসনটি দখলে নীতি অত্যন্ত সচেষ্ট। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্বাচনের এখনো ২মাস বাকি থাকলেও বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী যে সকল প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আহমেদ ফিরোজ কবির, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আশিকুর রহমান খান সবুজ। এর বাইরেও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু, সাবেক সচিব ড. মজিবুর রহমান, রাকসুর সাবেক জিএস খন্দকার জাহাঙ্গীর কবির রানা ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা আবদুল মতিন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে দলটির নেতা-কর্মীদের মুখে শোনা যাচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন নির্বাচনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও নির্বাচনী মাঠে বর্তমান সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান উজ্জ্বলের অবস্থা ভালো। তারা প্রায় প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপকভাবে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক এবং সভা-সমাবেশ করছেন। পাশাপাশি আশিকুর রহমান খান সবুজও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা- কর্মীরা এ আসনে একজন কর্মীবান্ধব তথা ত্যাগী ও পরীক্ষিত আওয়ামী সংগঠককে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান। নির্বাচনী এলাকার সাতবাড়ীয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শামসুল আলম বলেন বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। সুতরাং তৃণমূল নেতা কর্মীরা চান এ আসনে একজন কর্মীবান্ধব তথা দক্ষ সংগঠককে মনোনয়ন দেওয়া উচিত। অন্যথায় প্রার্থীর জয় লাভ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়বে। এদিকে নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচনী মাঠে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ্যড: এ.কে.এম সেলিম রেজা হাবিব, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুল হালিম সাজ্জাদ। বিশেষ করে বিএনপি'র তৃণমূল নেতা কর্মীদের মুখে সাবেক সংসদ সদস্য আ্যড: এ.কে.এম সেলিম রেজা হাবিবের নাম বেশ সরব।