ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বাজারে চিত্রা নদীর উপর নবনির্মিত ব্রীজের কাজ চলমান থাকায় শহরের জনতা মোড় থেকে একটি বাইপাস রাস্তা কাঠের একটি সেতু হয়ে অপর প্রান্তে হাসপাতাল সড়কের গিয়ে মিশেছে। কালীগঞ্জ শহরের মধ্যে একমাত্র যাওয়ার প্রধান ভরসা এই কাঠের সেতু। ব্রীজটি নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চিত্রা নদীর উপর অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ছোট একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হয় জনসাধারনের চলাচলের সেতু। সেতুটির দুই প্রান্তে রাস্তার খানা গর্ত ও অসমতল হওয়ায় চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনসাধারনের। গত বছর থেকে চলতি বছর প্রায় ১৫ মাস ধরে ব্রীজের নির্মান কাজ চললে কিন্তু বাইপাস সড়ক ও সেতু জনিত জনদুর্ভোগ কমেনি। একটু বৃষ্টি হলে এ কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারে না,কাঠের সেতুর দু,পান্তে কাদার কারনে। বর্তমানে কাঠের সেতুটি সাত থেকে আট স্থানে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে গেছে। অনেক স্থানে আবার ভাঙ্গা স্থানে লাগানো বড় বড় লোহার তারকাঁটা আলগা অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুটি ব্যবহার করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। চিত্রা নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটির কাজ ২০২২ সালের জুলাই মাসে থেকে শুরু হলেও এখনো কাজ সম্পূর্ণ রূপে শেষ হয়নি। যে কারণে মানুষ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়সারা ভাবে তৈরি করা ব্যবহার অনুপযোগী কাঠের সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে অনেকটা বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে ভাঙ্গা কাঠের সেতু অপরদিকে রাতে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় চলাচলে মানুষের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।এই সড়ক ও সেতু দিয়ে প্রতিদিন শুধুমাত্র পথচারী, স্কুল, কলেজ, অফিসের কর্মরত ব্যাক্তি,বিভিন্ন ব্যবসায়ি, বাজারের ক্রেতা, বিক্রেতারা পায়ে হেঁটে,বাইসাইকেল ও মোটর সাইকেল যোগে চলাচলের একমাত্র ভরসা।বর্তমান কাঠের সেতুর যে অবস্থা বিরাজমান তাতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।কালীগঞ্জ বাজারে "মোবাইল ক্লিনিক" নামক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জহুরুল হক বিপ্লব বলেন, শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে আমার মোটর সাইকেলের সামনের চাকা কাঠের সেতুর ভাঙ্গা অংশে আটকে যাওয়ায় আমি পড়ে যায়। জনসাধারনের চলাচলের সুব্যবস্থা ছাড়াই ১ বছরের অধিক সময় ধরে অস্থায়ী কাঠের এই সেতুটি দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। কাঠের সেতুটি এতই নি¤œমানের শুরু থেকে মানুষ চলতে ফিরতে ভয় পেয়ে আসছিল। ব্রীজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন না হওয়ার কারণে কালীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়িরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব দিকে কারো কোন নেকনজর নেই। ভাঙ্গা কাঠের সেতুতে দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নেবে ? এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারী নলডাঙ্গা ভুষন পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সলিমুননেছা বালিকা বিদ্যালয়, মহিলা মাদ্রাসা, ফয়লা প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ নুর আলী কলেজ,সরকারী মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা ও ব্যাংক বীমাসহ বিভিন্ন অফিস এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মানুষ চলাচলের একমাত্র ভরসা। কালীগঞ্জ পৌর ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন,শুরু থেকেই অস্থায়ী ভাবে নির্মিত এই সংযোগ সড়ক ও কাঠের সেতুটি যথাযথ ভাবে তৈরি না করাই জনগণকে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় নির্মিত কাঠের সেতুটিও এখন ভাঙতে শুরু করেছে। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে এই পাশে আলোর ব্যবস্থা না থাকার কারণে রাতে পথচারি ও মটর সাইকেল নিয়ে যাওয়া ব্যাক্তিরা কাঠের সেতু উপর থেকে পড়ে চিত্রা নদীতে পড়ে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। চিত্রা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কনসিক এ- বিল্ড লিমিটেডের সাইট পরিচালক আরিফ হোসেন জানান,নির্মাণ কাজ প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে কাঠের সেতুটি আগে একবার সংস্কার করা হয়েছে। আবারো সংস্কারের প্রয়োজন হলে করা হবে।