হরতালকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাটে আওয়ামীলীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের বেড়পাঙ্গা আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নিহত জাহাঙ্গীরের চাচা মাওলানা লুৎফর রহমান জানাজার নামাজে ইমামতি করেন। দুপুরের পর থেকে যুবলীগ নেতা নিহত জাহাঙ্গীরের জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগে সকল স্তরের নেতাকর্মীরা মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল ৩টায় মাদ্রাসা মাঠে নিহত জাহাঙ্গীরের লাশ নিয়ে আসা হয়। পরে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. মতিয়ার রহমান উপস্থিত মুসুল্লিদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেয়ার পর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. মতিয়ার রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোড়ল হুমায়ুন কবীর, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাশসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। জানাজা নামাজ শেষে নিহত জাহাঙ্গীরের বাড়ির পাশে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। এর আগে দুপুর ১টার দিকে নিহত জাহাঙ্গীরের লাশ তার বাড়িতে নিয়ে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চারিদিকে কান্নার রোল পড়ে যায়। নিহত শ্রমিকলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী আফরোজা বেগম বলেন, বিএনপির বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী আমার স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। স্বামীর মৃত্যুতে আমার তিন সন্তান এতিম হয়ে গেলো আর আমি হলাম বিধবা। হত্যার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি তার। লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা মুঠোফোনে জানান, বিএনপির ডাকা হরতালে নেতাকর্মীরা শান্তিপুর্ন ভাবে কর্মসূচি পালন করছিল। কিন্তু আ'লীগের সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। সেখানে কার আঘাতে জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়েছে তা তিনি জানেন না। লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অএ্যাডঃ মতিয়ার রহমান বলেন,জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলু সন্ত্রাসীদের গডফাদার। দুলুর নির্দেশনায় হামলা করে নির্মমভাবে আমাদের যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরকে খুন করেছে। মরদেহ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। মৃতের দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর অভিযোগ দেয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আহবান করে তিনি আরো বলেন অবিলম্বে হত্যাকান্ডে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করা হোক। লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক জানান, এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। বিএনপির নাশকতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তবে তারা জড়িত আছে কি না এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে হরতালে নাশকতার অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে দুইটি মামলা হয়েছে। উল্লেখ্য, রোববার বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা পিকেটিং করার জন্য মাঠে নামলে আ'লীগের নেতাকর্মীরা তাতে বাঁধা দেয়। পরে দুই দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির পিকেটারদের হামলায় যুবলীগ নেতা ন্যাংড়া জাহাঙ্গীর ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রাজুু আহমেদ গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়।