রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর ফিরোজ মিয়া ফেরেস হত্যা মামলার ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন রংপুর জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক তৌহিদুর রহমান। সোমবার এই রায় ঘোষনা করা হয়। এ সময় আদালতে ৪ আসামি উপস্থিত ছিলেন। মামলা সুত্রে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে ফিরোজ মিয়া ফেরেসকে (২২) ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি পীরগাছা থানায় সাধারণ ডাইরি করেন ফেরেসের বাবা। এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কি.মি দূরে মাষাণকুড়া নদী সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি গুচ্ছগ্রামে মাটি চাপা দেয়া একজনের লাশ মাটি খুঁড়ে বের করে কুকুর। লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। এ সময় এটি ফেরেসের লাশ বলে শনাক্ত করেন তার পরিবারের লোকজন। পরে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে টিপু, শাহিন মিয়া, সুলতান হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম নামে ৪ বন্ধুকে আটক করে। এদের মধ্যে শাহিন মিয়া ও জাহিদুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিতেই পরিকল্পিতভাবে ফিরোজ মিয়া ফেরেসকে হত্যা করে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় বলে জবানবন্দিতে অংশ নেয়া ৪ বন্ধু আদালতে স্বীকার করেছেন। এঘটনার পর স্থানীয় লোকজন কান্দি বাজারে মানববন্ধন করে ফেরেস হত্যার বিচার দাবি করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সোমবার রংপুর জেলা দায়রা জজ তৌহিদুর রহমান ৪ আসামির সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরো ৫ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। নিহত ফেরেস এর চাচা রকি মিয়া বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেছি। তারপরও এই রায়ে আমরা খুশি। বাদি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন রংপুর আইনজিবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক।