রংপুরের পীরগাছায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন বড় ভাই ও বোনের মধ্যে
দ্বন্দ চরম আকার ধারন করেছে। পরিবারের লোকজন দুই দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের
উপর হামলা ও জমি দখলের চেষ্টার ঘটনায় বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এদিকে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় যেকোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের
আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কেকোয়ান নবু
গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে খোরশেদ আলম বাড়ির পার্শ্বে ব্রাহ্মণীকুন্ডা
বাজারে ০৭ শতক জমি ক্রয় করে সেখানে মার্কেট নির্মান করেন। মার্কেটের
দোকানগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভাড়া দিয়ে তিনি চট্টগ্রামে একটি
কোম্পানিতে চাকুরী করতে থাকেন। তার এই অনুপস্থিতির সুযোগে ওই
মার্কেটের জমির উপর নজর পড়ে আপন ছোট বোন রহিমা খাতুন ও ছোট ভাই
আশাদুল ইসলামের। তারা ০৬ মাস থেকে মার্কেটের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে
জোরপূর্বক মাসিক ভাড়া উত্তোলন করতে থাকে। এই সংবাদ পেয়ে খোরশেদ
আলম চাকুরী ছেড়ে নিজ বাড়িতে এসে ঘটনার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে
পীরগাছা থানায় অভিযোগ ও সাধারন ডাইরী করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছোট
বোন রহিমা খাতুন ও ছোট ভাই আশাদুল ইসলাম একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী
নিয়ে গত ১৮ অক্টোব বড় ভাই খোরশেদ আলমের মার্কেটের দখল নিতে যায়। এতে
বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা খোরশেদ আলম ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে
এবং তার পক্ষের রাব্বি মিয়া ও জুয়েল রানা নামের দুই যুবককে বেধরক মারপিট
করে। এ সময় তারা ভাংচুর করে মার্কেটের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এঘটনায়
খোরশেদ আলম ছোট ভাই আশাদুল ইসলামসহ ০৭ জনের বিরুদ্ধে পীরগাছা
থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১৪, তারিখ- ২১/১০/২০২৩
খ্রিষ্টাব্দ। মামলা দায়েরের পর রহিমা খাতুন ও আশাদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা
খোরশেদ আলমকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়ার পরও
মামলা তুলে না নেয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলার সাক্ষী ফারুক হোসেনকে
রাস্তায় একা পেয়ে বেধড়ক পেটায় এবং খোরশেদ আলম ও তার স্ত্রী-সন্তানদের
বাড়ি থেকে বের হতে দিবে না বলে জানিয়ে দেয়। এ ঘটনায় সাক্ষী ফারুক
হোসেন পীরগাছা থানায় পৃথক একটি সাধারন ডাইরী করেছেন।
খোরশেদ আলম বলেন, হুমকী ধামকীর মূখে বর্তমানে তিনি পরিবার পরিজন
নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আসামীদের কথামত
মামলা তুলে না নেয়ায় ছোট বোন রহিমা খাতুন তাকে ও তার স্ত্রী-সন্তানদেরকে
হয়রানী করার জন্য পীরগাছা থানায় একটি সাজানো মামলা দায়েরের পায়তারা
চালাচ্ছে।
এব্যাপারে বোন রহিমা খাতুন নিকট জানতে চাইলে তিনি ভাড়াটিয়া
সন্ত্রাসী দিয়ে হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই জমির উপরে তার অংশ রয়েছে।
তাই তিনি জমি দাবী করতে গিয়েছিলেন।
পীরগাছা থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে তদন্ত
সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।