নীলফামারীতে অনুভুত হচ্ছে শীতের আমেজ। সকাল ১০টা পর্যন্ত গায়ে লাগছে শীতের আমেজ। হালকা হালকা পড়তে শুরু করেছে। অনুভূত হচ্ছে প্রতিদিন শীতের আমেজ। সকালে ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু। সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার সাথে সাথে লাগে শীত শীত। গাছিরা খেঁজুর গাছ থেকে রস বের করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। গভীর রাতে কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে এ অঞ্চলের পথঘাট। ক্রমেই শীতের তীব্রতা বাড়ছে। মধ্যরাত থেকে লেপ, কাঁথা, কম্বল গাঁয়ে জড়ানো শুরু করেছে অনেকেই। ইতোমধ্যে শহর এবং গ্রামের লেপ তোষকের দোকানগুলোতে বেচাকেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন রাত কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ধুনকাররা।
নিম্ন আয়ের লোকজন পুরাতন তোষক নিয়ে আসছেন ধুনকারদের কাছে। শহরের কাপড় ব্যবসায়ীরা গরম কাপড়ের মজুদ গড়ে তুলেছেন। অপরপাশে সৈয়দপুর শহরে জ্যাকেট তৈরির প্রায় ৫শ কারখানায় চলছে পুরোদমে কাজ। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরাও আমদানি শুরু করছেন। কেউ কেউ অনেক আগেই গরম কাপড় গোডাউন জাত করে রেখেছেন। এখন তারা ভাবছেন এ বছর কেমন শীত পড়বে। কারণ বেশী শীত পড়লে তাদের বেশী বেচা বিক্রী হয়ে থাকে। আর যদি দীর্ঘ সময় শীত স্থায়ী হয় তাহলে গরম কাপড় ব্যবসায়ীদের পোয়া বারো।
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের এক কাপড় ব্যবসায়ি জানান, সৈয়দপুর হলো উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ কাপড়ের পাইকারী বাজার। ফলে এ শহরে ওই সব গরম কাপড় বিক্রয়ের জন্য রয়েছে সহ¯্রাধিক ছোট ছোট দোকান। বৃহত্তর রংপুর এবং দিনাজপুর জেলার মধ্যস্থল হলো সৈয়দপুর। আর এ শহরের সাথে রাজধানী ঢাকাসহ বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও খুলনার সাথে রয়েছে রেলপথ এবং সড়ক পথের চমৎকার যোগাযোগ। এছাড়াও রয়েছে আমদানি ও রপ্তানিকারকদের জন্য সহজ যোগাযোগ সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আর এসব সুযোগ সুবিধার কারণে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের সাথে উত্তরের ৮ জেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে সুন্দরতম যোগাযোগ। ফলে এ শহরের পাইকারী বাজার থেকে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলায় পুরাতন গরম কাপড় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তবে এ বছর শীত মৌসুমে গরম কাপড়ের বেচাকেনা কেমন হতে পারে তা এ মুহূর্তে কোন মন্তব্য করতে পারছেন না তিনি। এদিকে লেপ তোষক ব্যবসায়ী খালেক আলী (৪৫) জানান, এ বছর তার দোকানে অনেক আগ থেকেই শুরু হয়েছে লেপ, তোষক তৈরির কাজ। তিনি আশা করেন গত বছরের চেয়ে এ বছর ব্যবসা ভালো হবে। কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর ভরা ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুম। লোকজনের হাতে টাকা পয়সা থাকবে। তাই এ পরিস্থিতি আশা করা যায়। সৈয়দপুরের পাইকারী ও খুচরা কোট ব্যবসায়ি মোঃ মামুন হোসেন জানান, গত বছর তেমন একটা ব্যবসা হয়নি তার। কারণ ওই বছর শীত অনেক দেরিতে এসেছিল। আর এ বছর কার্তিক মাসেই শীত পড়তে শুরু করেছে। ফলে ৪ মাস শীত থাকতে পারে এ বছর। তাই ব্যবসা ভাল হবে এমন আশা করেন ওই ব্যবসায়ি। সৈয়দপুর নিউ ক্লোথ মার্কেটের ব্যবসায়ি মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, তিনি ১২ বছর ধরে কাপড় ব্যবসা করে আসছেন। কোন সময়ের জন্য তার ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয়নি। শীত কম হলে বিক্রি তেমন হয়না। তবে লোকসান তার নেই। একই কথা জানালেন ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম। এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায় গত বছরের চেয়ে এ বছর শীতের প্রকোপ বেশী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।