গাজীপুরের কাপাসিয়া মডেল থানায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে একটি নাশকতার মামলায় মৃত এক ব্যক্তিকে আসামি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার থানার উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। মোঃ আমিন উদ্দিন মোল্লাকে ১৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ওই ব্যক্তি ২ বছর ৯ মাস আগে মারা গেছেন।
উপজেলার গাগুটিয়া ইউনিয়নের খিরাটি গ্রামের মৃত আশরাফ আলী মোল্লার পুত্র মৃত আমিন উদ্দিন মোল্লা। এ বিষয়ে আমিন উদ্দিনের জামাতা মোজাম্মেল হক বলেন, ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারী তাঁর শ্বশুর মারা যান। মারা যাওয়ার ২ বছর ৯ মাস পর তাঁর শ্বশুরকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমিন উদ্দিন মোল্লা পাশ^বর্তী নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ৬৫ বছর বয়সে ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে নাশকতার মামলাটি করেছেন। এ মামলায় আমিন উদ্দিন ছাড়াও ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত শনিবার রাত সোয়া এগারোটার দিকে কাপাসিয়ার তরগাঁওস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড় এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের উশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করার জন্য সংঘবদ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি ককটেল ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের ফেলে যাওয়া অবিস্ফোরিত চারটি, বিস্ফোরিত একটি ককটেলের খোসা এবং চারটি পেট্রোল বোমা উদ্ধার হয়। মামলার এজাহারে আমিন উদ্দিনের পিতার নাম ও ঠিকানা সঠিক লেখা হলেও বয়স ৪৫ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ ওই ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। ঘাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা জানি, আমিন উদ্দিন মোল্লা ২০২১ সালের জানুয়ারীতে মারা গেছেন। তাঁর পিতার নাম আশরাফ আলী মোল্লা। মৃত আমিন উদ্দিনকে কোনো মামলায় আসামি করা হয়েছে কি না, তা তাদের জানা নেই।’
নাশকতার এই মামলায় কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা’কে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অথচ তিনি দাবী করে বলেন, ‘আমি বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ এবং গত প্রায় একমাস যাবত আমি কাপাসিয়া যাই না।’ তাছাড়া মামলায় তার বয়স ৫০ বছর উল্লেখ করা হলেও বর্তমানে তার বয়স ৭৬ বছর চলছে। এ বয়সে রাতের আঁধারে ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে পুলিশের সামনে থেকে পালিয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব কিনা সে প্রশ্ন রাখেন তিনি সচেতন মহলের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর মিয়া বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। শুধু বললেন, ১৮ নম্বর আসামি সম্পর্কে তাঁরা যাচাই করে দেখবেন।