কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দুই একর জমির একটি পুকুরে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে প্রায় ৭০মণ মাছ বিনষ্ট করেছে দূর্বৃত্তরা। যার আনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষাধিক টাকা বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি দাবী করেছে। এ ঘটনায় রাজারহাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের মাছ চাষি মোঃ আবদুর রাজ্জাক (৪৫) এ পুকুরে। বুধবার (১লা নভেম্বর) সকালে ওই চাষির পুকুরে কয়েক হাজার মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখে এলাকাবাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবদুর রাজ্জাক বেসরকারি চাকরি ছেড়ে আত্মকর্মসংস্থানের পথ বেঁচে নেন। প্রথমে শখের বসে মাছ চাষ করলেও গত বছর ধরে বানিজ্যিক ভাবে মৎস্য চাষে ঝুঁকে পড়েন তিনি। মৎস্য খামারটি স্বামী স্ত্রী মিলে দেখাশুনা করেন এবং এই মাছ চাষ করে পরিবারের ভরণপোষণ চালাতেন। প্রতিদিনের মত গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৎস্য খামার থেকে রাত তিনটার পর বাড়ি চলে আসলে পরদিন বুধবার(১লা নভেম্বর) সকালে পুকুর পাড়ে গিয়ে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখে হতবাক হয়ে যান তিনি। তার প্রজেক্টের পুকুরে কার্ফু, গ্লাস কার্প, সরপুঁটি, কাতল, রুই, ব্রিগেড, সিলভার কার্প, শিংসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৭০ মণ মাছ মারা গেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। এ ঘটনায় মাছ চাষি আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা আমার পুকুরে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে পুকুরের সব মাছ মেরে ফেলেছে। সকালে পুকুরে মরা মাছ ভেসে উঠা দেখে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অনেক চেষ্টা করেছি মাছ গুলোকে বাঁচানোর। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। ঋণের টাকা নিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। দূর্বৃত্তরা আমাকে পথে নামিয়ে দিলো। আমি রাজারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। চাই প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করুক। আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী স্মৃতি বেগম কান্নœাজড়িত কন্ঠে বলেন,আমরা স্বামী স্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে এই প্রজেক্ট করে আসছি। এ আয় থেকে আমাদের সংসার চলে। সন্তানের লেখা পড়ার খরচ দেই। কি এমন শত্রুতা যে রাতে কেবা কারা পুকুরে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে পুকুরে মাছগুলো মেরে ফেলেছে। এখন আমাদের কী হবে। যারা পুকুরে বিষ দিয়েছে তাদের বিচার চাই আমি। প্রতিবেশী আকরাম হোসেন বলেন, মানুষের মধ্যে শত্রুতা দেখেছি। কিন্তু মাছের সাথে শত্রুতা করে এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় প্রথম দেখলাম। কে বা কারা রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে সব মাছ মেরে ফেলেছে। সকালে এসে দেখি পুকুরের মাছ গুলো মরে ভেসে আছে। গন্ধে বাড়িতে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যারা এ কাজ করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ হিল জামান লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।