বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের পর দুদিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। এতে জনজীবনে প্রভাব পড়েছে। ঢাকার রাস্তায় যাত্রী কম। বিপাকে পড়েছেন সিএনজি অটোরিকশার চালকরাও। তারা বলছেন, রাস্তায় লোকজন কম থাকায় আগের মতো আর ডেকে ডেকেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে যেখানে দৈনিক দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় হতো এখন সেখানে এক হাজার থেকে বারোশো টাকা হওয়াই কষ্টকর। তারা বলছেন, মালিকের ভাড়া, গ্যাসের খরচ এবং গ্যারেজ ভাড়া দিয়ে এখন তাদের যে আয় হচ্ছে এতে পরিবার নিয়ে চলাই কষ্টকর।নিউ মার্কেটের সামনে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশাচালক রুবেল বলেন, আগে দুই-আড়াই হাজার টাকা ইনকাম করতাম। এখন হাজার-বারোশো হয়। মালিকরেই দেওয়ার কথা এক হাজার টাকা। গ্যাস ভরতে হয় প্রায় ৩০০ টাকার আবার গ্যারেজ ভাড়া দিতে হয়।
তিনি বলেন, এখন ইনকাম নাই তাই মালিককে অনুরোধ করে ৬০০-৭০০ টাকা দেই। গ্যারেজ ভাড়া দিতে হয় ২০০ টাকা। গতকাল রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে সব বিল দিয়ে নিজের ছিল ৩৫০ টাকা। এই টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে কেমনে চলবো?
এই অটোরিকশাচালক বলেন, অবরোধে আমরা অনেক কষ্টে আছি। আমাগোরে দেখার কেউ নাই। সবাই ভাড়া কম দিতে চায়। কেউ আর বেশি দেয় না।
মগবাজারের অটোরিকশাচালক আলাল বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন মালিকের ভাড়া-বিলসহ দেড় হাজার টাকা খরচ হয় আমার। আগে সব বিল বাদ দিয়েও দিনে কমপক্ষে এক হাজার টাকা থাকতো। এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থাকে।
আরও কয়েকজন চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিটারে চলার নিয়ম থাকলেও সেই নিয়ম কেউ মানেন না। মিটারে চলাকালীন গাড়ির মালিককে দৈনিক ৫০০ টাকা দিতে হতো। এখন ভাড়ায় চলায় দিতে হয় এক হাজার। এটিই এখন নিয়ম হয়ে গেছে।
ধানমন্ডি এলাকায় কথা হয় অটোরিকশাচালক রফিকের সঙ্গে। এই প্রতিবেদককে তিনি জানান, এমনিতেই সব জিনিসের দাম বাড়তি আর অবরোধের ফলে তাদের আয় কমেছে। এতে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন তারা।
তবে অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় গাড়ির চলাচলের সংখ্যা গতকালের তুলনায় বেড়েছে। রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশসহ টহল পুলিশের গাড়ি দেখা গেছে।