মন্দিরে দান করা জমি রাতের আঁধারে বেদখলকে কেন্দ্র প্রতিপক্ষের মারপিটে ৭ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকালে পীরগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের বেনিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। জমি দাতা সুবল চন্দ্র ও রবি চন্দ্র তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ করছেন বেনিপুর গ্রামের শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
অভিযোগে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে পীরগাছা উপজেলার সীমান্ত ঘেষা বেনিপুর শারদীয় দূর্গা মন্দিরের জন বিগত ২০০০ সালে ৩ শতাংশ জমি দান করেন ওই গ্রামের সুবল চন্দ্র মাষ্টার এবং তার ভাই রবি চন্দ্র। এরপর তারা মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের সরকারি তহবিল থেকে ২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ নেন এবং স্থানীয় ৪০টি হিন্দু পরিবারের নিকট ২ লাখ টাকা চাঁদা তোলেন। ওই টাকা দিয়ে সুবল চন্দ্র ও রবি চন্দ্র মন্দিরের জন্য ১৫ ফিট লম্বা একটি ঘরের ভিত্তি দেন। ঘরের কাজ মেঝে বরাবর শেষ করে কাজ বন্ধ করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন সুবল চন্দ্র মাষ্টার এবং রবি চন্দ্র। তারপরও ওই স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন পূর্জা অর্চনা করে আসছিলো। গত বুধবার রাতে হঠাৎ করেই মন্দিরের জায়গায় স্থানীয় কামালপুর গ্রামের প্রভাবশালী সাবেক পুলিশ সদস্য আবদুর রাজ্জাক তার লোকজন নিয়ে মাটি ভরাট করতে থাকেন। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বাধা দিলে বৃহস্পতিবার সকালে আবদুর রাজ্জাক, সুবল চন্দ্র, রবি চন্দ্র তাদের লোকজন নিয়ে স্থানীয় লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে ভেকু চন্দ্র (৪০), মনোবালা (৩০), দূর্জয় চন্দ্র (১৭), রনজিৎ দাস (৬০) ও যতেষ্ঠ চন্দ্র (১৫)সহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে মনোবালার অবস্থা গুরুতর। তাকে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মন্দির কমিটির সভাপতি বিনোদ কুমার দাস বলেন, দুই টন চাল আর দুই লাখ টাকার যৎ সামান্য খরচ করে তারা সব টাকা আত্মসাৎ করেছে। দীর্ঘদিনেও মন্দিরের জায়গাটি ছেড়ে না দিয়ে এখন ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা মন্দিরের হিসাব ও জায়গা ছেড়ে দিতে বললে প্রভাবশালী পরিবারটি ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাকের মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অপর অভিযুক্ত রবি চন্দ্র বলেন, তারা সমাজ ভেঙ্গে দুটো করেছে। এখানে আমরা পূর্জা করি। বিনোদ কুমাররা অন্যত্র জমি কিনে মন্দির করেছে। সরকারি অর্থ ও চাঁদার টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কয়েকদিনের মধ্যে বসে এটা সমাধান করে দেব। এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ডালিম সরকার বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আর লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।