চাঁদপুরের মেঘনা নদী বেষ্টিত হাইমচর উপজেলায় এবার আমনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে সোনালি ধান। আর কাকডাকা ভোর থেকে পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ফলনের পাশাপাশি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক। তবে চাল ও ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি সিন্ডিকেট মুক্ত রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান তারা। হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাকিল খন্দকার বলেন, দুই দফায় প্রকৃতিক দুর্যোগে এবার ফলনের কোনো ক্ষতি হয়নি। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। যা হেক্টর প্রতি ৩ মেট্রিক টন উৎপাদন হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের আমন আবাদে আরও আগ্রহ বেড়ে গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার হাইমচরে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫০৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ১৪২০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ধান কাটা শেষ হবে বলে ধারণা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস। তবে সময়মতো রোদ-বৃষ্টি থাকায় উপজেলার চরাঞ্চলসহ আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা, কৃষ্ণপুর, আলগী উত্তর ইউনিয়নের লামচরী, নয়ানী ও ভিঙ্গুলিয়া, মহজমপুর,নয়ানী লক্ষীপুরে অনেক অনাবাদি জমিতে আবাদ হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার পূর্বচর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক সাইজুদ্দিন বেপারী বলেন, এবার ৮ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলে ধানের ভর্তুকি দিতে হবে না। উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নের আমন চাষি আবদুল কাদির বলেন,কৃষক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে ৫/৭ দিনের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শেষ করে ঘরে তোলা যাবে। একই এলাকার কৃষক জামাল উদ্দিন ও আবদুস সোবহান জানান, কিছুটা ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। যদি ইঁদুরের উপদ্রব না থাকতো তাহলে আমন ধানের ফলন আরও ভালো হতো। ১১-১২ বিঘা জমি চাষ করে ৪১-৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদেও চাষাবাদে লাভ হবে আমরা আশাবাদী। চরভৈরবী ইউনিয়ন জালিয়ার চর এলাকার ধান চাষি মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় ধানের ফলন অনেক ভালো। আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো। তবে কিছুটা ধানে পোকা আক্রমণ করলেও তাতে তেমন ক্ষতি হবে না। কারণ এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে, বাজারে দামও অনেক ভালো। আশা করি, লাভবান হতে পারবো। দক্ষিণ পাড়া বগুলা গ্রামের কৃষক শাজাহান বেপারী জানান, ৫ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। এ বছর ধানের ফলন অনেক ভালো। আগামী ৮/১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াই কাজ শুরু করবো। বাজার দাম ভালো পেলে, বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে উঠতে পারবো।