চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দমকা হাওয়া হালকা, মাঝারী ও ভারী বর্ষনে বিদ্যূৎ ব্যবস্হা ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন স্হানে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়লে ও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এভাবে বর্ষন অব্যাহত থাকলে আমন ধান ও মৌসুমী সবজি ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গৃহস্থ কৃষক ও উপজেলা কৃষি বিভাগ। গত বুধবার মধ্য রাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার দিনে হালকা এবং দিবাগত রাত থেকে মাঝারি ও ভারি বর্ষন শুরু হয়। বিকাল থেকে শুরু হয় দমকা হাওয়া।
জানা যায়, এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের আমান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার হেক্টর। কিন্তু আমানের রোপা লাগানোর সময় ভারি বর্ষনের ফলে সুষ্ট বন্যায় উপজেলার আওতাধীন নিন্ম এলাকার অনেক কৃষকের রোপা আমনের চারা নস্ট হয়ে যায়। এরপর কৃষি বিভাগ আমনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেন ৮ হাজার ৯ শ ৫০ হেক্টর জমির। ইতোমধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রার অপেক্ষাকৃত উপরী এলাকায় আগাম লাগানো দশ ভাগের এক ভাগ আমন ধান পেকে কাঁটার সময় হয়েছে। অনেক কৃষক নিজেদের পাকা ধান কাটতে শুরু করেছে। যাদের ধান কাঁটার সময় হয়েছে অকাল বর্ষন তাদের জন্য একপ্রকার অভিশাপের ন্যায় বলে মত প্রকাশ করছেন অনেক কৃষক। তবে অপেক্ষাকৃত নিন্ম এলাকায় যেসব কৃষক বৃষ্টি ও বন্যার কারণে মৌসুমের শেষে আমন রোপা লাগিয়েছেন তাদের জন্য এই বৃষ্টি আশীর্বাদ স্বরুপ বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক। কারণ তাদের ধান গুলো এখন পাকতে শুরু করেছে। এই সময় একটু বৃষ্টির প্রয়োজন ধানগুলো পোক্ত হতে। বর্ষন অব্যাহত থাকলে উপজেলার আওতাধীন বিভিন্নস্হানে আমনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দমকা হাওয়ার কারণে উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন স্হানে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়লে ও তেমন কোন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সকালের দিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিদ্যূৎ চলে যায়। এতে করে যেসব পরিবার বৈদ্যূতিক মোটরের সাহায্যে নলকুপ থেকে নিত্য ব্যবহার্য পানি উত্তোলন করে তারা সীমাহীন বেকায়দায় পড়ে যায়। বিদ্যূৎ না থাকায় গনমাধ্যম কর্মীদের ও বেকায়দায় পড়তে হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ আল মামুন সিকদার জানান, এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু আমন রোপা লাগানো পর পর প্রবল বর্ষন ও বন্যার ফলে কিছু আমন ফসল নস্ট হয়ে যায়। ফলে সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮ হাজার ৯শ ৫০ হেক্টর। সম্প্রতি অকাল বর্ষনের পূর্বে উপজেলার উপরী অংশের লক্ষ্যমাত্রার দশ ভাগের এক ভাগ জমির আমন ধান কেটে কৃষক ঘরে তুলেছে। বাদবাকি নয় ভাগ জমিতে রয়েছে। এই সময় জমিতে থাকা আমন ধানের জন্য একটু বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। মৌসুমী সবজি ক্ষেতের জন্য ও সামান্য বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। এই বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে জমিতে থাকা আমন ধানের ও মৌসুমী সবজি ক্ষেতের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে নিন্ম চাপের কারণে বৃষ্টি বন্ধ হবে কিনা এনিয়ে শংকা প্রকাশ করছেন কৃষকেরা।