কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে ধান কাটতে বাঁধা দিতে গেলে আকলিমা বেগম ও আরিফ নামের ২ জনকে রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষরা।
জানা গেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামে জমিজমা নিয়ে আবদুল লতিফ ও মতিন গং এর সাথে এনছার আলী ও জিল্লুর রহমানের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে জিল্লুর রহমান গং আবদুল লতিফ ও আবদুল মতিন গং এর বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং ভুরুঙ্গামারী থানা ও এসিল্যান্ড বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১২ নভেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: তাহমিদুল ইসলাম, ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি রুহুল আমিন ও পাথরডুবি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস ছবুর উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠকের পর ধান কেটে দু'পক্ষকেই ভাগ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত জানান। সালিশে বিষয়টি মেনে নেন তারা। কিন্তু আবদুল লতিফ গং সালিশী সিদ্ধান্ত ও সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিজেদের লোকজনকে নিয়ে বৃহস্পতিবার ওই জমির ধান একাই কেটে নেয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে জিল্লুর রহমান সংঘর্ষ এড়াতে ভূরুঙ্গামারী থানায় ফোন করেন। থানা থেকে ফোন না ধরায় তিনি পুলিশের জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানান। জরুরী নম্বরে ফোন পেয়ে এএসআই আবু বক্কর ও একজন কনস্টেবল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আবদুল লতিফ গংকে ধান কাটতে নিষেধ করেন। তখন আবদুল লতিফ গং ধান কাটা বন্ধ রেখে জমি থেকে উঠে আসে। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চলে যাওয়ার পর আবদুল লতিফ গং আবারো ধান কাটা শুরু করে। বিষয়টি জানাতে পুলিশকে ফোন দিয়ে কোন সাড়া না পেয়ে জিল্লুর রহমান তার লোকজনকে নিয়ে জমিতে গিয়ে ধান কাটতে বাঁধা প্রদান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুল লতিফ, আবদুল মতিন, হযরত আলী, হোছেন আলী ও নজরুল ইসলামসহ তাদের লোকজন জিল্লুর রহমান গংয়ের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় উমর আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম ও বাচ্চু মিয়ার পুত্র আরিফ হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদিকে বিরোধপূর্ণ জমির ধান কেটে লতিফ, মতিন ও হজরত আলী বাড়ীতে ঢিবি দিয়ে রেখেছে।
এ ব্যাপারে জিল্লুর রহমান তার জমির ধান উদ্ধারসহ হামলাকারী আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বিষয়টি নিয়ে পাথরডুবি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস ছবুর জানান, উভয় পক্ষের কাগজ পর্যালোচনা ও সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে আমাকে জানিয়ে ধান কেটে ভাগ করে নেয়ার কথা থাকলেও লতিফ মতিন গং তা অমান্য করে ধান কেটে নিয়েছে। এ ঘটনায় সংঘর্ষে আহতের ঘটনাও ঘটেছে। দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করি।
এবিষয়ে ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন জানান, এ বিষয়ে একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।