দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিতা-পুত্র দু’জনেই তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন। ইতোমধ্যে পিতা আবদুল খালেক সরকার (৬৩) নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসন থেকে এবং ছেলে মিজানুর রহমান সরকার ডালিম (৪০) কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) থেকে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। আবদুল খালেক তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেও তার ছেলে কোন পদে নেই। ৮ম শ্রেণী পাশ আবদুল খালেক ব্যবসা করেন এবং এসএসসি পাশ ডালিম গরু পালন করেন। এদিকে, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এই পিতা-পুত্রকে নিজ নিজ এলাকার ভোটাররা চিনতে পারছেন না। প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে আগ্রহী অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চাওয়ায় বিষয়টি ভোটারদের মাঝে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, গত রোববার আবদুল খালেক ও তার ছেলে তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমাও দিয়েছেন। ২৭ বা ২৮ নভেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়ন ফরম জমা দেবেন তারা। আবদুল খালেক বলেন, একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে নাজমুল হুদার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। তৃণমূল বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দলটির সঙ্গে রয়েছেন তিনি। দলের সিদ্ধান্তে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। একসময় নির্বাচনে তার দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে থাকবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এদিকে, ছেলে কুষ্টিয়া-১ আসনের প্রার্থী মিজানুর রহমান ডালিম জানান, তিনি এতোদিন আওয়ামীলীগকে সমর্থন করতেন, সক্রিয় রাজনীতি করেননি। এখন তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তবে এখনও দলীয় কোন পদ পাননি। এসব কারণে লোকজনের মাঝে পরিচিতি কম থাকতে পারে।
এদিকে, নাটোর-৪ আসনের ভোটাররা বলছেন, এই আসনে তৃণমূল বিএনপির কার্যক্রম নেই। আবদুল খালেক এ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দাও না। তিনি নিজেও এ এলাকায় কোন রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে দেখা যায়নি। এ কারণে ভোটাররা তাকে চিনতে পারছেন না।
বড়াইগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র ইসাহাক আলী বলেন, আবদুল খালেক কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা। তার এক ছেলে বড়াইগ্রাম পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে কয়েক বছর আগে বাড়ি করেছে। তিনি ও তার পরিবারের কেউই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত না।
নির্বাচনী এলাকায় সংগঠন না থাকার কথা স্বীকার করে আবদুল খালেক বলেন, নাটোর জেলাসহ দেশের ৬৪ জেলায় সংগঠন রয়েছে। তবে নাটোর-৪ আসনে কোনো কমিটি নেই। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠনের কাজ শেষ করে প্রচারণায় নামবেন বলে তিনি জানান। বিএনপি ভুল সিদ্ধান্তের মধ্যে ডুবে আছে। যুগপৎ আন্দোলন সংগ্রামে সফল হয়নি দলটি। গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাসী নয় বলেই বিএনপি নির্বাচনে আসছে না বলে তিনি জানান।
স্ত্রী দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে আবদুল খালেকের পরিবার। এক ছেলে সংসার দেখাশোনা করেন। বড় ছেলে কম্বোডিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। বড় মেয়ে স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ছোট মেয়ে কুমিল্লায় স্বামীর সঙ্গে থাকেন।