দারিদ্র্যতা আর নানা অসঙ্গতির সঙ্গে নিত্যলড়াই যেন নিয়তি। তার পরও লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছে প্রকাশটা বুঝি অযৌক্তিক! তবু সে দমেনি। হার মানেনি দারিদ্র্যের কাছে। নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম করেও জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। মূল লক্ষ্য যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দারিদ্র্য দূর করে পরিবারের দুঃখী বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটানো। সে অনুযায়ী জীবনযুদ্ধে নেমে শতবাধা পেরিয়ে সাদিয়া সুলতানা রুপা আবারও দেখিয়েছে বিশেষ কৃতিত্ব। উপকুলীয় জনপদ কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ থেকে এবারে এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। সে এর আগে কয়রা সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল সে। শতপ্রতিকূলতা সত্ত্বেও তার পড়ালেখায় ছেদ পড়েনি। তার স্বপ্ন বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়া। কিন্তু চরম দারিদ্র্যতা তার সেই স্বপ্নপূরণের পথে বিশাল বাধা। এ বাধা ডিঙিয়ে সেই স্বপ্নপূরণ হবে কিনা সে চিন্তাই এখন সারাক্ষণ সাদিয়া সুলতানা রুপার। মেধাবী সাদিয়া সুলতানা রুপা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চায়। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে রুপার। উপজেলার ২নং কয়রা গ্রামের আবুল বাশার গাজী ও নাসিমা সুলতানার মেয়ে সাদিয়া সুলতানা রুপা। পরিবারে ৩ ছেলে মেয়ের মধ্যে সাদিয়া সুলতানা রুপা সকলের বড়। তার বাবা আবুল বাশার গাজী জমিজমাহীন একজন দরিদ্র ভ্যান চালক। ভ্যান চালিয়ে চলে তাদের সংসার। কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ অদ্রিশ আদিত্য মন্ডল বলেন, অত্যন্ত মেধাবী সাদিয়া সুলতানা রুপা দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও অভাবী সংসারে কষ্ট করে লেখাপড়া করে ভালো ফল করেছে। দোয়া করি, সে যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজের সেবা করে। তার পিতা আবুল বাশার গাজী বলেন,তার মেয়ের স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে সরকারি একটা বড় চাকুরী করা। তবে অর্থের কাছে সে স্বপ্ন পুরুন হবে কিনা তা নিয়ে শংসয় রযেছে তার পরিবারের। সে জন্য তার পিতা মেয়ের লেখা পড়া শেষ করার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষের নিকট সহযোগিতা কামনা করেছে। সাদিয়া ভাল ফলাফলের জন্য তার পিতা মাতা সহ শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।