জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের কর্মকান্ডকে ‘রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়। এর আওতায় সব ভোটারের কাছে নিজেদের কাজ ও উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে চায় দলটি। এ লক্ষ্যে দেশজুড়ে থাকা দলীয় কার্যালয় গুলোতে স্থাপন করা হয়েছে স্মার্ট কর্নার।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্থানীয় তরগাঁওস্থ লতাপাতা বাজারে দলীয় কার্যালয়ে ক্যাম্পেইনার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি। প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^ বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম ও ফারজানা নাসরিন।
ক্যাম্পেইনার প্রশিক্ষণে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৯৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. মোঃ আমানত হোসেন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. রেজাউর রহমান লস্কর মিঠু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. মোঃ মাজহারুল আলম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন প্রধান, সাধারণ সম্পাদক রাজীব ঘোষ প্রমূখ। অন্যান্যের মাঝে উপজেলা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইতোপূর্বে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের হল রুমে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ আ্যন্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সহায়তায় প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী পরিষদের সাবেক সচিব ও আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবির বিন আনোয়ার।
ক্যম্পেইনার প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি সিমিন হোসেন রিমি বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের ভার্চুয়াল যোগাযোগের মাধ্যম হবে এই স্মার্ট কর্নার। আগামী নির্বাচনে স্মার্ট কর্নারের মাধ্যমেই সারাদেশে প্রচারণা টিম ম্যানেজমেন্ট করা হবে। প্রতিটি ভোটারের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছাতে স্মার্ট কর্নার হবে একটি কার্যকরী মাধ্যম।
আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রের বরাদ দিয়ে তিনি বলেছেন, স্মার্ট কর্নারের কার্যক্রম হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও নিউজ পোর্টাল/পত্রিকার তালিকা করা হবে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও দলের ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভার্চুয়াল যোগাযোগ তৈরি ও অনলাইন প্রচারণায় স্থানীয়দের সমন্বয় করা হবে।
প্রশিক্ষণে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছেন। এ অনুযায়ী স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষিসহ সবক্ষেত্রে রোবোটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট শিল্প কারখানা, স্মার্ট ব্যবসা, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করেছেন। এজন্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মকান্ডকে ‘রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়।
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কর্মসূচিকে সামাজিক আন্দোলন আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এজন্য সরকার ও দলকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা হবে বলে জানান প্রশিক্ষকরা।
এর অংশ হিসেবে প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে স্মার্ট কর্ণার স্থাপনের কথা উল্লেখ করে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে দলের ভূমিকা রাখার বিকল্প নেই বলে জানান তারা।
স্মার্ট কর্নারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন, সফলতা তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া দেশবিরোধী দেশি ও বিদেশি চক্রান্ত ও গুজবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হবে।
সাংগঠনিক জেলার স্মার্ট কর্নার তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ভূমিকা রাখবে। এজন্য ‘রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ’র আওতায় প্রাথমিকভাবে ১৫ জেলার ১০০ কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
স্মার্ট কর্নার ব্যবস্থাপনার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিটি শাখার নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় করবে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এজন্য প্রত্যেক কমিটির একজন ফোকাল পয়েন্ট, চার জন স্মার্ট ক্যাম্পেইনার (২ জন নারী, ২ জন পুরুষ) কাজ করবেন। এরপর একইভাবে প্রত্যেক উপজেলায় ১০ জন করে (৫ জন নারী, ৫ জন পুরুষ) ক্যাম্পেইনার কাজ করবেন।