পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সাগর তীরবর্তী দুবলার চরের তিন দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শেষ হয়েছে। সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সাগরের প্রথম জোয়ারে পুণ্যার্থীরা গঙ্গা স্নান সেরে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এবারের উৎসবে প্রায় ১৫ হাজার পুণ্যার্থী অংশ নিয়েছে বলে জানা গেছে। রাস উৎসবে আসা পূণ্যার্থীদের নিরপত্তা দিতে বন বিভাগ প্রয়োজনীয় পাদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অনেকের মতে পঞ্চদশ শতকে পূন্ড রাজারা দক্ষিণাঞ্চলে এসে রাজত্ব করেন। তারা দুবলার চরে রাস মেলার প্রবর্তণ করেন। ঐতিহাসিক এ এফএম আবদুল জলিলের সুন্দরবনের ইতিহাস গ্রন্থে বলা হয়েছে বিংশ শতাব্দির দ্বিতীয় দশকে ফরিদপুর জেলার ওরাকান্দির জনৈক ঠাকুর স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে এখানে পূজা পার্বনাদি অনুষ্ঠান শুরু করেন। সেই থেকে রাস মেলার যাত্রা। প্রায় দু’শ বছর ধরে দুবলার চরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এ রাস উৎসবের পূর্ণ্য স্নান। সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করা যায় এ দ্বীপে এলে।
দুবলারচর রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আহমেদ সোমবার মোবাইল ফোনে বলেন, ২৫ নভেম্বর শুরু হওয়া দুবলার চরের তিন দিনের রাস উৎসব সোমবার সকালে শেষ হয়েছে। সনাতন ধর্মের পূর্ণ্যার্থীরা সোমবার প্রত্যুষে আলোরকোলে সাগরের প্রথম জোয়ারে গঙ্গা পূজা ও পূর্ণ স্নান করেন। স্নান সেরেই পুণ্যার্থীরা নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এর আগে রোববার রাতে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পুণ্যার্থীরা আলোরকোলের অস্থায়ী মন্দিরে রাধা কৃষ্ণের পূজা অর্চনা করেন। এবারের রাস উৎসবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৫ হাজার পণ্যার্থী অংশগ্রহণ করেন বলে কামাল উদ্দিন জানিয়েছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, দুবলার রাস উৎসবে পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।