বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বার্থে এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে মেধাবী তরুণদের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অংশগ্রহণ করা খুব জরুরী। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করতে হয়। কিন্তু রাজনীতির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আজকের প্রজন্ম যুক্ত হতে চায় না। এখন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী মনে করেন, রাজনীতিতে নাম লেখানো মানে নিজেদের পরাধীন করে তোলা। তরুণদের এই চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আনা উচিত। আমরা তরুণরা যদি রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ না হই, দেশের হাল না ধরি, তবে একপর্যায়ে আমাদেরই এই দেশ পঙ্গু হয়ে যাবে, অচল হয়ে যাবে। তবে কিছু কথা আমাদের মনে রাখা উচিত- রাজনীতি কোনো পেশা নয়। পেশা হচ্ছে সেটা, যেটার মাধ্যমে মানুষ টাকা উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আর রাজনীতি কোনো টাকা উপার্জনের জায়গা নয়। ‘রাজনীতি মানে দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ, দেশের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতা।’
আজকাল যে ছাত্রনেতার সাঙ্গপাঙ্গ যত বেশি, যে নেতার পেশিশক্তি যত বেশি, তার ক্ষমতার দাপট তত বেশি, ক্যাম্পাস যেন তার রাজত্বে। আবার অনেকে হলে সিট পেতে, পরীক্ষায় নকলের সুযোগ তৈরি করতে, আধিপত্যকে বিস্তার করতে রাজনীতির খাতায় নাম লেখান, যা ক্যাম্পাস রাজনীতিকে পচনের দিকে নিয়ে গেছে। এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতিই গড়ে উঠছে সর্বত্র। এসব কারণে রাজনীতির মাঠ সমতা নেই বলে তরুণরা ধীরে ধীরে রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী চুপচাপ লেখাপড়া শেষে কর্মজীবনে প্রবেশ করাই শ্রেয় মনে করেন। এসকল কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ খুবই হতাশাজনক। এছাড়াও অধিকাংশ রাজনীতিবিদ রাজনীতিকে তাদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তারা রাজনীতির মাধ্যমে দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের বদলে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে বেশি আগ্রহী। আর তাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য ভুগতে হচ্ছে দেশের জনগণকে।
বর্তমান সীমাবদ্ধতা দূর করা জরুরি। সেজন্যে তরুণরা যাতে দেশ, সমাজ নিয়ে গঠনমূলক কথা বলতে পারেন, সে জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতে হবে। সর্বোপরি তরুণদের পছন্দসই রাজনৈতিক দল অনুসরণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। সর্বোপরি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে প্রগতিশীল করতে, রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সুদৃঢ় করতে, দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ উপরে বিবেচনা করতে তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করানোর কোনো বিকল্প নেই। যত দ্রুত তরুণরা কর্মক্ষেত্রে নিজেদের মেধা ও শ্রম ঢেলে দিতে পারবে দেশের মঙ্গল ততো ত্বরান্বিত হবে। সরকারকে এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। পৃথিবীব্যাপী এই তরুণরাই দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে, এরা দেশের হৃৎপিন্ড।