মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দ্বিতীয় দফায় ভারী বর্ষণে আলু চাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে অতি বৃষ্টিপাতের কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ার সমভাবনা রয়েছে। এতে করে চরম শঙ্কায় পড়েছে এখানকার হাজারো আলু চাষীরা৷ তবে তার জমির পানি নিস্কাশনের জন্য প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছেন। সারাদিনেও বৃষ্টি না কমায় তাদের চেষ্টাও কোনরুপ কাজে আসছেনা। এতে করে বড়ধরনের ক্ষতির মুখে পরতে পারে আলু চাষীরা। এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশঙ্কা রয়েছে। সরোজমিন ঘুরে দেখাযায়, সদ্যরোপনকৃত জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে চরম ভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এ উপজেলার হাজারো কৃষক। ফলে চলতি অর্থবছরের আলু উৎপাদন লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক কৃষিজমিতে আলু রোপন কাজ শেষ হয়েছিলো। বৃষ্টির কারণে রোপণকৃত আলু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে। কৃষকরা জানান,ধার দেনা কর্য করে আলু রোপণ করতে হয়েছে তাদের। তবে বৃষ্টিতে সব শেষ করে দিচ্ছে। এর আগেও প্রাথম দফার বৃষ্টিতে অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এবার দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিতে হাজার হাজার কৃষক সর্বস্বান্ত হতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন। গোড়াপীপাড়া গ্রামের আলী আহাম্মদ বলেন,এবার আমি ৮০ শতাংশ জমিতে আলু রোপন করেছি। এখন বৃষ্টিতে সব আলুর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে এতে করে আমার প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি হতে পারে । যদি রোপনকৃত বীজ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আবার বীজ কিনে লাগাতে হবে, কিন্তু যেভাবে বীজের দাম দিন দিন বাড়ছে তাতে করে সমস্যায় আরো পরতে হবে। বাক্স আলু ৯ হাজার টাকা ছিলো এখন ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা হয়েছে। নাটেশ্বর গ্রামের বাদল মীর বলেন, প্রথম দফার বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সেটা কাটিয়ে না উঠতেই এখন দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিতে আমরা সর্বস্বান্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কোন ভাবেই পূরণ করা সম্ভব না। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে জমিতে বৃষ্টির পানি আটকে না থাকে। সেজন্য পানি অপসারনের চেষ্টা চালাচ্ছি। কৃষক আলী ইসলাম, জুয়েল, শহিদ হাওলাদার, শরীফ বেপারী তারা জানান, কেউ ভোর রাতে এসে আলু বীজ তৈরী জমিতে পলিথিন দিয়ে ঢেকেছেন। কিন্তু কানিতে কানিতে জমি ঢাকা সম্ভব না। কেউ সকাল থেকে সেচের ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছেন। কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না, সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি হলে কছিুতেই জমি রক্ষা করা যাবে না। আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে। সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সাঈদ শুভ্র জানান, জেলার সিরাজদিখান উপজেলা আলু চাষে অন্যতম। এবছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯ হাজার হেক্টর জমি। এবার আলুর দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদের সম্ভাবনা ছিলো। বৃষ্টি ও বৈড়ি আবহাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হবে। জমিতে পানি যাতে না জমে থাকে সেজন্য নালা করে পানি অপসারণের পরামর্শ দেন তিনি। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক জমিতে আলু রোপন শেষ হয়েছিলো। তবে যে ভাবে ভাড়ী বৃষ্টি হচ্ছে এতে করে আলু লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে এ উপজেলা কি পরিমান আলু জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনো নিরূপণ করা যায়নি।