পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারলো, মারতে মারতে যখন সে বেহুশ হয়ে গেছে তখন তার মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে মাথায় কুপালো। এরা হচ্ছে বিএনপি নেতা। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি! পুলিশ হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে হামলা চালিয়ে এম্বুলেন্স পোড়ানো হলো। সেখানে পুলিশদেরও আহত করা হলো। এমনকি সাধারন রোগী বহনকারি এম্বুলেন্সের উপর হামলা করা হল্।ো এই হচ্ছে বিএনপি-জামাতের চরিত্র। তাদের উপর জনগণের অস্থা বিশ^াস থাকবে কিভাবে? এদের আন্দোলন মানেই জ¦ালাও পোড়াও।এদর শিক্ষাটা বোধহয় ইসরাইলের কাছ থেকে নেওয়া। ইসরাইলয়েরা হাসপাতালে বোম্বিং করে নারী শিশু রোগীদের আহত করেছে।সেখানেও কিন্তু এম্বুলেন্সের উপর আক্রমণ হয়েছে। ছোট ছোট শিশুসহ যেভাবে মানুষ হত্যা করছে। সেখানে লাশের স্রোত বয়ে যাচ্ছে। জামাত-বিএনপি বোধহয় ইসরাইলের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করছে। শুক্রবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমানের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার ছেলে মুচলেকা দিয়ে চলে গেল লন্ডন। বলল, আর জীবনে রাজনীতি করব না। এখন ওখানে বসে হুকুম দিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যা করাছে। জিয়াউর রহমান যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনা বাহিনীর অফিসার, সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, ঠিক একইভাবে জিয়ার বউ ক্ষমতায় এসে আমাদের আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের হত্যা করে। আর তার ছেলেও এখন একই কাজ করছে। জিয়া পরিবার পুরোটাই একটি খুনি পরিবার। তারা মানুষ খুন আর দূর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই চায় না। নিজেরা ক্ষমতায় থেকে সমানে অর্থ বানিয়েছে, সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এরা মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। এটাই তাদের চরিত্র। নিজের শাসনামলের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা দেশের অনেক উন্নয়ন করেছিলাম। বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসার পর আমরা দেশটি যেখানে রেখে গিয়েছিলাম সেখান থেকে আবার পিছিয়ে পড়েছিল। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কমে গিযেছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছিল। একে একে সবকিছ’ আবার পিছন দিকে চলে গিয়েছিল। আমাদের ছিল ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আর সে আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতা শুন্য হাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তখন একটি টাকাও রিজার্ভ মানি ছিলনা। কোন খাবার ছিলনা। তখন কোন ফসল হয়নি। রাস্তা ঘাট কিছুই ছিল না। যা ছিল তাও ধ্বংসস্তুপ। ওই অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন দেশে ফিরে আসলেন তখন তিনি এই ধ্বংসস্তুপের উপর দাড়িয়ে দায়িত্বভার নিয়েছিলেন। ওইসময় একজন বিদেশী সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দেশেতো কিছুই নাই, কোন রিসোর্স নেই, আপনি কিভাবে এদেশ গড়ে তুলবেন ? তখন জাতির পিতা বলেছিলেন আমার মাটি আছে, দেশের মানুষ আছে। আমি মাটি ও মানুষ দিয়ে এদেশ গড়ে তুলবো। দেশে ফিরে আসার কথা বলতে গিয়ে আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ৮১ সালে আমি যেদিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি সেই দিন ঘোষনা দিয়ে ছিলাম বাংলাদেশের মানুষ তারাই আমার আপণজন, তারাই আমার আত্মীয়। আমি সেইদিন বাংলাদেশের সকল মানুষ ও মুজিব আদর্শের সৈনিকদের ভালবাসার ছোঁয়া পেয়ে ছিলাম। এরাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। বাংলাদেশে আসার পর আমার চলার পথ মসৃণ ছিল না। যে ঘাতকরা আমার বাবা-মা’কে নির্মমভাবে হত্যা করে ছিল তাদের বিচার হবে না। ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, বিচার হতে রেহাই দেওয়া হয়েছে।বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে হত্যাকারিদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে যারা গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ করে বাংলাদেশের সম্পদ পুড়িয়েছে, লুটপাট করেছে, নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে। সেইসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন সেই বিচার পরবর্তীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় যারা জেলখানায় ছিল তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারাই তখন কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ মন্ত্রী, কেউ উপদেষ্টা আবার কেউ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বসা ছিল সেই অবস্থায় আমি বাংলাদেশে ফিরে আসলাম। তখন আমাকে অনেকেই দেশে ফিরতে নিষেধ করেছিলেন। অনেকেই বলেছিল, আপনি যাচ্ছেন আপনার কি হবে! তখন আমি আমার মনের তাগিদে দেশে ফিরে এসে ছিলাম। আর সেইদিন আমার ছোট বোন রেহানা বলেছিল আমি বাচ্চাদের দেখবো। তুমি দেশে ফিরে যাও। নিজের জীবনের উপর হামলার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার বার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। এই কোটালীপাড়াই বিশাল বিশাল বোম মাটির নীচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। একজন সামন্য চায়ের দোকানদার খুজে বের করলো সেই বোমা। একটি ছিল ৭৬ কেজি আরেকটি ছিল ৮৬ কেজি। এই দুটি বোমা মাটির নীচে পোঁতা ছিল। সেখান থেকে আমি উদ্ধার পেলাম। আর তা ছাড়া যেদিন থেকে এই বাংলাদেশে এসেছি সেদিন থেকেই সভা, সমাবেশে আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এই অবস্থায় আল্লাহ আমাকে বার বার বাঁচিয়ে এনেছে। এরমধ্য দিয়ে ৯৬ সালে সরকার গঠন করি। ২০০৯ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় আছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশটাতো বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আথৃ সামাজিক উন্নতি হয়েছে। এখন আর দেশের মানুষের খাদ্যের হাহাকার নেই। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। চিকিৎসা সেবা মানুৃষের দোরগোড়ায় পৌছাতে পেরেছি। শিক্ষার সুযোগ করি দিচ্ছি। ঠিক যেমনটি জাতির পিতা চেয়েছিলেন। একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আমরা এমনটা পেরেছি। আমরা একটানা ক্ষমতায় না থাকলে দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হতো না। শেখ হাসিনা কোটালীপাড়ার নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন,আমি মূল শক্তি ও সাহস হচ্ছে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসি। আর বাংলাদেশের জনগণতো আছেই। এজন্য আমি সর্বক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। আপনাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আপনারা আমার নির্বচনী এলাকার দায়িত্ব নিযেছেন বলেই আমি সারাদেশের কথা ভাবতে পারছি। আগামী ৭ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনারা আমাকে প্রার্থী করেছেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এরআগে ভোট চাওয়া যায় না। নির্বাচনী একটি শৃঙ্খলা আছে। আমাদের সেই শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। আমরা নির্বাচনকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আমরা আইন পাশ করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। এটাকে স্থায়ীভাবে রূপ দেওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ^াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য রাখেন। এসময় বাগেরহাট -১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা -২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তম্ময়,যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, জেলা আওযামীলীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, প্রধানমন্ত্রীর সহকারি নাজমা আক্তর, সহকারি একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকু সহ কোটালীপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।