নাজিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস আজ ৯ ডিসেম্বর শনিবার। উত্তর চট্টগ্রামের অন্যতম রনাঙ্গন নাজিরহাটে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মূখ যুদ্ধ হয়। এদিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটে। পাক বাহিনী চলে যাওয়ার পর শুরু হয় মুক্তিকামী ছাত্র জনতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আনন্দ উল্লাস। দিন ভর ফটিকছড়ি, হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ানেরা চাঁদের গাড়িতে করে কামান এবং অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মানচিত্র খচিত পতাকা নিয়ে আনন্দ উল্লাস করে নাজিরহাটে সমবেত হয়। সেদিন চলছিল বিজয়ের উল্লাস। গোপনে সংবাদ পেয়ে পলাতক পাক হানাদার বাহিনী সন্ধ্যায় হাটহাজারীর অদুদিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ৩-৪টি যাত্রীবাহী বাসে করে নাজিরহাট আসে। তারা উল্লাসরত মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ জনতার উপর অর্তকিত হামলা চালায়। শুরু হয় উভয়ের মধ্যে সম্মূখ যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নায়ক তফাজ্জল হোসেন (বরিশাল), সিপাহি নূরুল হুদা (কুমিল্লা), সিপাহি অলি আহাম্মদ (খুলনা), সিপাহি নূরুল ইসলাম (সন্ধীপ), সিপাহি মানিক মিয়া (চট্টগ্রাম), ফোরক আহাম্মদ (নাজিরহাট), হাসিনা খাতুন (নাজিরহাট), আবদুল মিয়া (নাজিরহাট), নূরুল আবসার (কুমিল্লা), মুক্তিযোদ্ধা মুজিবর হক (ফরহাদাবাদ) ও অজ্ঞাতনামা একজনসহ ১১ জন শহীদ হন। এরপর পাক হানাদার বাহিনী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নাজিরহাট, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ লুঠ তরাজ, নাজিরহাট হালদা নদীর সেতু ধ্বংস হত্যাযজ্ঞসহ নারকীয় কর্মকাণ্ড চালায়। নাজিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নাজিরহাট গনকবরে পুস্পশ্রদ্ধা অর্পণ, খতমে কুরআন, বিশেষ মুনাজাত ও দোয়া মাহফিল।