ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা গাজীরটেক ইউনিয়নের চরহাজীগঞ্জ বাজারের ‘মেসার্স বিনয় কৃষ্ণ দাস’ নামক ডিলারের মাধ্যমে কালো বাজারে সার সরবরাহর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার সকালে উক্ত সার ডিলার ভিন্ন উপজেলা থেকে কালো বাজারের মাধ্যমে ২০০ বস্তায় মোট ১০ মে.টন. সার এনে চরহাজীগঞ্জ বাজারের পদ্মা নদী ঘাটে স্তুপ করলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সার পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কালো বাজারে সার পাচারের ফলে উপজেলার কৃষকরা তাদের চাহিদামত সার পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন যুগান্তরকে জানান, “সার পাচারের সংবাদ পাওয়া মাত্র আমি পদ্মার ঘাটে ফেলে রাখা সার স্তুপের নিকট ছুটে গিয়েছি এবং অন্য উপজেলা থেকে সার কিনে আনার কারন জেনেছি। তিনি বলেন, অত্র উপজেলা চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠে চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টা, গম, সরিসা ও তিল আবাদের জন্য প্রচুর পরিমানে সার দরকার। প্রতিমাসে সরকার থেকে যে পরিমান সার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তার প্রায় দ্বিগুন পরিমান সার উপজেলায় চাহিদা রয়েছে। তাই ডিলাররা অন্য এলাকা থেকে সার কিনে এনে উপজেলার কৃষকদের চাহিদা মেটাচ্ছেন”।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় প্রতিমাসে সারের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬০০ মে.টন। সেখানে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ২৫০ মে.টন। বাকী ৩৫০ মে. টন. সারই ভিন্ন এলাকা থেকে পাচার করে এনে কৃষকদের চাহিদা পূরন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলার চরহাজীগঞ্জ বাজারের ‘মেসার্স বিনয় কৃষ্ণ দাস’ ডিলারের মালিক বিকাশ চন্দ্র দাস জানায়, “অত্র গজীরটেক ইউনিয়নে আমরা দু’জন ডিলার রয়েছি। চলতি মাসে সরকারিভাবে আমি সার বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৪৭ মে.টন। কিন্ত পদ্মা নদীর চরাঞ্চল বেষ্টিত অত্র ইউনিয়নে সারের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২০০ মে.টন। তাই অন্য এলাকা থেকে সার এনে স্থানীয় কৃষকদের চাহিদা পূরন করতে হচ্ছে। তিনি পদ্মা পারে স্তুপকৃত ১০ মে.টন সার মাত্র একজন কৃষকের বলেও জানান”।
উপজেলা পদ্মা নদী অপর পারের চরহরিরামপুর ইউনিয়নের চরশালেপুর গ্রামের কৃষক আঃ জব্বার জানান, “ চরাঞ্চলের জোদ্দাররা ট্রলি ও গোড়ার গাড়ী বোঝাই করে সার নিয়ে শত শত একর জমির ভুট্টা গম আবাদ করে চলেছে। অনেক সময় আমাদের সারের অভাবে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। গবির কৃষকদের টাকা হলেও সব সময় সার মিলে না”।