লা লিগায় শিরোপা লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ায় এমনিতেই বার্সেলোনার ওপর বাড়ছিল চাপ, তা আরও বাড়ল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্বল এন্টওয়ার্পের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায়। সমালোচকরা যেন এর অপেক্ষাতেই ছিলেন, অন্তত ফেররান তরেসের কথায় তাই মনে হয়। স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড পাল্টা অভিযোগ তুলে বললেন, কিছু মানুষ বার্সেলোনাকে ধংস করতে চায়। সমালোচকদের এভাবে উঠেপড়ে লাগার অবশ্য কিছু কারণ আছে। মৌসুমের এখনও মাঝপথ না আসতেই লিগ টেবিলে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বার্সেলোনা। সবশেষ গত শনিবার জিরোনার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৪-২ গোলে ধরাশায়ী হয়ে শীর্ষস্থান থেকে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে গেছে বার্সেলোনা। ১৬ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে জিরোনা। ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে বার্সেলোনা। ওই ধাক্কা না কাটতেই এন্টওয়ার্পের বিপক্ষে এবারের হার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এই ম্যাচের শুরুর একাদশে অবশ্য অনেক পরিবর্তন আনেন কোচ শাভি এর্নান্দেস। তারপরও বেলজিয়ান দলটির বিপক্ষে কাতালান ক্লাবটির এমন হার মানতে পারছে না অনেকেই। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ৯ ম্যাচে ৪টিতে হারল বার্সেলোনা। সেটাও বড় এক ভাবনার কারণ। শাভির ওপর যা ক্রমেই বাড়াচ্ছে চাপ। এন্টওয়ার্পের বিপক্ষে জালের দেখা পাওয়া ২৩ বছর বয়সী তরেস কোচের প্রতি আস্থা রেখে বলেন, শাভির কোচিংয়েই তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। “আমরা শেষ পর্যন্ত কোচের পাশে আছি এবং তার পরিকল্পনায় আস্থা আছে আমাদের।” “কোচের সমালোচনা করা সহজ কাজ, কিন্তু মাঠে থাকে খেলোয়াড়রা। আমরা জানি, বার্সায় কিভাবে সবকিছু কাজ করে, বাইরের মানুষরা আমাদের ধংস করার চেষ্টা করছে। আমাদের নার্ভাস করার চেষ্টা চলছে, কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়াব। সবসময়ই বাইরে অনেক কিছু চলে, এর সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।” শুরুর একাদশে আট পরিবর্তন এনে মাঠে নামা বার্সেলোনাকে দ্বিতীয় মিনিটেই স্তব্ধ করে দিয়ে এগিয়ে যায় এন্টওয়ার্প, গোলটি করেন আর্থুর ভেরমিরেন। ৩৫তম মিনিটে সমতা টানেন ফেররান তরেস। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভিনসেন্ট ইয়ানসেনের গোলে ফের এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। শেষ দিকে ম্যাচ নতুন নাটকীয় মোড় নেয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে হেডে বার্সেলোনার মার্ক গিউ সমতা ফেরান। অবশ্য পরের মিনিটেই লিনিখেনা জালে বল পাঠিয়ে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান। বারবার ছন্দ হারানো এবং জয়ের পথ থেকে দল ছিটকে পড়ায় চিন্তার যথেষ্ট কারণ দেখছেন কোচ শাভি। কোনোরকম রাখঢাক না করে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সরাসরিই বললেন তিনি। “হ্যাঁ, আমি চিন্তিত। আমরা একটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, পরপর দুটি ম্যাচে ফল খারাপ হলো। “আমাদের আত্ম-সমালোচনা করতে হবে। আমাদের উন্নতি করতে হবে। প্রতিপক্ষ দল আমাদের বিপক্ষে অনেক সুযোগ তৈরি করছে, সেখানে আমরা তা করতে ভুগছি।” “খেলোয়াড়রা আজ তাদের সেরা ফর্মে ছিল না। তবে তাদের ব্যক্তিগত পালফরম্যান্স নিয়ে আমি সমালোচনা করতে পছন্দ করি না। তারা যেভাবে পারফরম করল, তাদের সামর্থ্য এর চেয়ে বেশি।” শেষটা হার দিয়ে হলেও গ্রুপ সেরা হয়েই অবশ্য নকআউট পর্বে উঠেছে বার্সেলোনা। ছয ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট তাদের। পোর্তোর পয়েন্টও সমান ১২, তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে কাতালান ক্লাবটি।