নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের হুলহুলিয়া টু সারদানগর খালে আ.লীগ নেতাকর্মীদের মাছ শিকারের অবেধ বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে শুকিয়ে মাছ শিকারের ফলে চলনবিলের কৃষি ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ার আশংকায় খালের অবৈধ সাতটি বাঁধ অপসারণ করে পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। সোমবার দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৫ কিলোমিটার সরকারি খাল অবমুক্ত ঘোষণা করেন সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান। অভিযানে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমাস, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফরিদ উদ্দিন, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইফতেখারুল ইসলামসহ মৎস্য অধিদপ্তর ও থানা পুলিশের অন্তত ১২ জন সদস্য এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান বলেন, এভাবে সরকারি খাল ইজারা বা কেনা বেচার নিয়ম নেই। তাছাড়া কৃষি ও কৃষকের সেচ ব্যবস্থার জন্য খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রে জানা যায়, পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১ ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সিংড়ার হুলহুলিয়া-টু-সারদানগর (নিয়ামত ব্রাঞ্চ) খালের ৫ কিলোমিটার অংশ পুনঃ খনন করা হয়। আর খালটি পুনঃ খননের ফলে এলাকার কৃষি জমিতে অল্প খচরে সেচ সুবিধা, ভূ-পরিস্থ পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানো, অতি বৃষ্টি জনিত কারণে জলাবদ্ধতার হাত থেকে ফসলকে রক্ষা, কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া, বিলের মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ কৃষকের সকল কাজে সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে অসময়েই খালটি শুকিয়ে মাছ শিকারের প্রতিযোগিতা ও খালে অবৈধ বাঁধ নির্মাণের ফলে নৌকা চলাচল বন্ধ এবং প্রকৃত মৎস্যজীবি ও দিন মজুরদের খালে মাছ ধরতে না দেওয়া এবং কৃষকদের পানি ব্যবহার না করতে দেওয়ার অভিযোগ পায় প্রশাসন। আর চৌগ্রাম ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি আল তৌফিক পরশের বিরুদ্ধে এই খাল বিক্রির অভিযোগ উঠে। পরে খালের সকল অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে কৃষকের সেচ ব্যবস্থার জন্য অবমুক্ত করা হয়।