বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে আমন ধান কাটার পর সেই জমিতে সরিষা চাষ করে, ভাল ফলন পাচ্ছেন।এতে করে এ এলাকায় তৈল জাত শস্য উৎপাদনে ব্যাপক ভুমিকা পালনের পাশাপাশি, আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এ এলাকার চাষিরা। স্হানীয় চাষিরা জানান, এলাকায় রবি মৌওসুমে গম, কাউন, কালাই, খেরাচি, ভুট্টা, মরিচ ও অন্যান্য শাক সবজীর ব্যাপক চাষ হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে চাষীরা সরিষা চাষে অধিক হারে ঝুঁকে পড়ছেন। এলাকার কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের ভালো পরামর্শ পেয়ে উন্নত জাতের সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ভালো ফলনও পাচ্ছেন তারা। বাজারে সরিষার দাম ভালো থাকায় আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। এমৌসুমে বিল ও চরাঞ্চলের চাষিরা ব্যাপক ভাবে সরিষার চাষ করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা যায়, জমিতে হলুদ ফুলে- ফলে দিগন্ত জোড়া মাঠে হলুদ সরিষার ফুল শোভা পাচ্ছে। চর এলাকায় দেশী সরিষা চাষের পাশাপাশি বিল এলাকার চাষীরা উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন। তবে বিল এলাকার চাষীরা বর্ষালী ও আমন ধান কাটার পর আধুনিক পদ্ধতিতে জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন। ফুলবাড়ি ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের চাষী বেলাল হোসেনের সরিষার জমিতে গিয়ে দেখা গেল, প্রায় তিন ফুট লম্বা সরিষার গাছে থোকা থোকা মোচায় কালো সরিষার দানা ধরেছে। মনে হলো জমিতে সরিষার গাছে যেনও কালো মানিক কৃষকের স্বপ্ন দোল খাচ্ছে। কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, আমনের মৌসুমে জমিতে করেছিলাম, এ জেড জাতের ধান। এ ধান কার্তিক মাসের ১৫ দিন যেতেই কর্তন করার পর ধানের ষোল আনা ফলন পেয়েছি। এরপর ওই জমিতেই করেছি, বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ। প্রায় ৪ বছরও ৩ বিঘা জমিতে এ ভাবে চাষাবাদ করে ভালো ফলনের পাশাপাশি আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছি আমি। এ বছরও ধানে ষোল আনা ফলন পাওয়ার পর, ওই জমির সরিষাতেও বিঘায় কমপক্ষে ৭ মন করে সরিষার ফলন পাবো আশা করছি। উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কুদরত আলী জানান, এ মৌসুমে এই উপজেলায় ৩৫'শ ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চাষীরা ভালো ফলনও পাবেন এবার। উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল হালিম বলেন, আগে চাষীরা সরিষা চাষ করে জমিতে অল্প পরিমাণ ফলন পেতো। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ অধিক ফলন পাচ্ছেন। বাজারে দামও ভালো থাকায় চাষীরা আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে রয়েছে আমাদেরও অনেক অবদান।