রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার সংঘাতের প্রভাব ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ডলার ইস্যুটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান, রিজার্ভ হ্রাস পাঁচ্ছে এবং প্রতিদিনের পণ্যের দাম বাড়ছে। জাঁতি কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। অবরোধ-ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সব ধরনের পণ্য, বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট-অবরোধের নতুন যৌক্তিকতা রয়েছে। রাজনৈতিক পরিবেশ ইঙ্গিত দেয় যে, বিষয়টি সম্ভবত আরও জটিল হয়ে উঠছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে হরতাল-অবরোধের মতো কিছু রাজনৈতিক দলের অনড় প্ল্যাটফর্মের কারণে দেশের অর্থনীতি এখন অস্পষ্ট। অগ্নিসংযোগ করা যে ফৌজদারি অপরাধ সেটি জানা থাকা সত্ত্বেও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা হরতাল-অবরোধ ডেকেই যাচ্ছে, চোরাগোপ্তা হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করে নিজেরা পালিয়ে যাচ্ছে, যানবাহনের মালিকদের অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখে ফেলছে। বাসে উঠলে ও কখন বাসে আগুন দেয়, সেই আতঙ্কে থাকলে হয়। এভাবে আর কত দিন জনগনদের চলতে হবে? কিন্তু এভাবে যুগপৎ আন্দোলনকারীরা কতদিন সহিংস হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাবে। তারা অবশ্য দাবি করছে যে নির্বাচন বন্ধ করা না হলে আন্দোলন আরো কঠোরতর হবে। কিন্তু কেউ স্পষ্ট করে বলছে না, কঠোরতর বলতে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছেন। অগ্নিসন্ত্রাস আরো বিস্তৃত করাকেই কি কঠোরতর আন্দোলন বলে ধরে নিতে হবে? তেমনটি ঘটলে সেটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ। সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে অগ্নিসন্ত্রাস হলে সেটিকে কীভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি বলা যাবে? জনগণের জন্য যারা আন্দোলন করে তারা জনগণের চলাচল বন্ধ করে কিংবা ভয়ভীতি, অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে যা করা হয়, তার সঙ্গে জনগণের স্বার্থ নয়, জনবিরোধী কর্মকা-ই ঘটে থাকে বলেই নিশ্চিতভাবে ধরে নেয়া যায়। রাজনীতিবিদদের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের জন্য সাধারণ জনগণ কেন কষ্ট করবে? কেউই মতবিরোধ থেকে দূরে থাকতে চায় না এবং সংলাপের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চায় না। এটা উদ্বেগজনক যে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও আমরা একটি নৈরাজ্যবাদী সমাজে বাস করছি। রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই এটা বুঝতে হবে। সরকারের উচিত জনগণের জীবন এবং সম্পদ রক্ষার জন্য চোরাগোপ্তা হামলাকারী ও অগ্নিসংযোগকারীদের কীভাবে নিবৃত্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।