নীলফামারীর সৈয়দপুরে একই জমিতে চার সাথী ফসলের চাষ করা হচ্ছে। সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া গ্রামে ওই সাথী ফসলের চাষ দেখা গেছে। ওই গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান জানান, তার প্রায় দেড় বিঘা জমিতে তিনি আলু চাষ করছেন। একই জমিতে আলুর সাথে তিনি লাগিয়েছেন বেগুন,মুলা,পেয়াজ ও রসুন। সব ফসলেই বেশ ভাল হয়েছে। তিনি জানান,আলু একটি অর্থকরী ফসল। তাছাড়া আলু এখন প্রতিদিনই প্রত্যেক পরিবারে লাগে। প্রতিদিনের রান্নায় আলু প্রয়োজন। এখন প্রধান খাদ্য ভাতের পর আলুর স্থান। একই জমিতে বছরে দুই বার আলু চাষ করা যায়। বর্তমানে বাজারে আলুর দাম বেশী হওয়ায় আলু চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। বিভিন্ন ধরনের আলু চাষ হয়ে থাকে। যেমন হাইব্রিড, দেশী লাল,দেশী সাদা,বিলাতী, কাটিলাল ইত্যাদি। তবে কাটিলাল হলেন্ডার আলুর চাষ বেশী হয়ে থাকে। বেলে দোআঁশ এবং দোআঁশ মাটিতে আলু চাষ হয়ে থাকে। উঁচু থেকে মাঝারি উচুঁ জমি যেখানে সেচ ও নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা আছে সে সকল জমি আলু চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। বেশ কয়েক বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি নরম বা ঝুরঝুরে করতে হবে। জমির উপরিভাগ সমতল করতে হবে। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বীজআলু বাড়িতে আনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বস্তা খুলে ছড়িয়ে আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচল করে এমন ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। কারণ বীজ কোল্ড স্টোরেজ থেকে বের করে বস্তা বন্ধ অবস্থায় রাখলে ঘেমে পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোল্ড স্টোরেজে রাখার আগে বীজ শোধন না হয়ে থাকলে অঙ্কুর গজানোর আগে বীজআলু দাদ বা স্ক্যাব এবং স্কার্ফ রোগ প্রতিরোধের জন্য ৩% বরিক অ্যাসিড দিয়ে শোধন করে নিতে হবে। এজন্য ১ লিটার পানিতে ৩০ গ্রাম হারে বরিক অ্যাসিড মিশিয়ে বীজআলু ১০ থেকে ১৫ মিনিট চুবিয়ে পরে ছায়ায় শুকাতে হবে। পলিথিন সিটের উপর আলু ছড়িয়ে স্প্রে করেও কাজটি করা যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন আলুর সব অংশ ভিজে যায়। সাধারণত বিঘা প্রতি অর্থাৎ ৩৩ শতকে ২শ থেকে ২শ ১০ কেজি বীজআলু প্রয়োজন হয়। রোপণ পদ্ধতি: অঙ্কুর গজানোর পর ১ম কুঁড়িটি ভেঙে দিতে হবে। কারণ ১ম কুঁড়ি ভেঙে দেয়ার পর অন্যান্য কুঁড়ি সমানভাবে বৃদ্ধির সুযোগ পায়। ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম ওজনের আস্ত আলু বীজ হিসেবে ব্যবহার করা উত্তম। কেটেও বীজ লাগানো যেতে পারে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন প্রতিটি কাটা অংশে কমপক্ষে ২টি চোখ বা কুঁড়ি থাকে। বীজ লাগানোর ২ থেকে ৩ দিন আগে আলু কেটে ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিলে কাটা অংশের ওপর একটা প্রলেপ পড়ে। ফলে মাটি বাহিত রোগ জীবাণু সহজে বীজে প্রবেশ করতে পারে না। সৈয়দপুরেরচার আলু চাষি ফজলুল হক জানান, প্রতি বছর তিনি আলু চাষ করতেন। এ বছরও করেছেন। কয়েক বছর আলুতে তার ক্ষতি হয়েছে। এ বছর বাজার দাম ভাল হওয়ায় তার ক্ষতি হয়নি।