নীলফামারীতে আরও একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মৃত চিতাবাঘটি নেওয়া হয়েছে ঢাকার আগারগাওয়ে। এটি নিশ্চিত করেন রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, খবর পেয়ে সৈয়দপুর বন বিভাগ থেকে ২১ ডিসেম্বর রাতে মৃত চিতাবাঘটি একটি পিকআপে সংরক্ষণের মাধ্যমে ঢাকার আগারগাওয়ে নেয়া হয়। সেখানে ময়নাতদন্তের পর প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে মৃত বাঘটিকে যাদুঘরে রাখা হবে। তবে হত্যার ঘটনায় মামলাও হতে পারে! তিনি আরো জানান গত ২১ বছরে দেশের শুধু উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জনপদে হত্যার শিকার হয় ৮ টি চিতাবাঘ। তবে এ ব্যাপারে কোন মামলা করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ২০ ডিসেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের আকালি পাড়ায় তিস্তা ক্যানেল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় দেখা মেলে একটি চিতা বাঘের। ওই বাঘটি এলাকার ৪ জনকে আহত করে। আহতরা হলেন ওই এলাকায় বুদু মিয়ার ছেলে বুলেট মিয়া (২৮), মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ফেরদৌস আলম (৩৫) ছকমাল হোসেনের ছেলে নায়েব আলী (৪০) ও মাগুড়া উত্তর পাড়া গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে জান্নাতুল (৮)। এদের সকলকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এলাকাবাসী ধাওয়া করে ওই লিওপার্ড প্রজাতির বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখে। পরে প্রশাসনের মাধ্যমে মৃত বাঘটিকে সৈয়দপুর বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর পুর্বে ২০১৮ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বসুনিয়াাপাড়া গ্রামের ঝোপে আশ্রয় নেওয়া একটি চিতাবাঘকে হত্যা করে এলাকাবাসি। বগুড়ার শেরপুরেও একটি চিতা দেখা গিয়েছিল। তবে শেরপুরেরটি মানুষের আক্রমণের কবল থেকে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সৈয়দপুর বন বিভাগ জানায়, কিশোরগঞ্জ বন বিভাগ সৈয়দপুরের অধীনে। কিশোরগঞ্জ থানা থেকে হত্যাকান্ডের শিকার চিতাবাঘটি এ অফিসে বিশেষ ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। মুলত এটি ছিল লিওপার্ড প্রজাতীর পুরুষ চিতাবাঘ। যার উচ্চতা ছিল আড়াই ফুট ও দৈর্ঘ্য ছিল ৪ ফুট। ওজোন প্রায় ৫৫ কেজি। দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা তীরবর্তী জেলাগুলোতে চিতাবাঘ প্রায়ই আসে। কারণ, তিস্তার উজানে ভারতীয় অংশের বনভূমিতে চিতা বাঘ বসবাস করে। সেখান থেকে দলছুট হয়ে কিংবা খাবারের সন্ধানে লালমনিরহাট, নীলফামারী এবং পঞ্চগড়ে চিতা বাঘগুলো আসছে বলে জানান সৈয়দপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ শাহিকুল ইসলাম মুসকুরি।