বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতন এলাকা হিসেবে দিরাই-শাল্লার সুনাম রয়েছে। এ আসনটি দেশের মধ্যে মর্যাদা পূর্ণ আসন। তবে এ আসনে কোন রাজনৈতিক দলের ভোট ব্যাংক নেই। দিরাই-শাল্লার দুই নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এবং নাছির উদ্দিন চৌধুরীর ভোট ব্যাংক রয়েছে এ এলাকায়। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন যে দল থেকে এ আসনে নির্বাচন করেছেন সেদলই বিজয়ী হয়েছে। তবে ১৯৯৬ সালে এ আসন থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে পরাজিত করে নাছির চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তবে এ আসনে সাম্প্রদায়িক ভোট হয় সব সময়। এবারও এর ব্যাতিক্রম হবে না। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পথ ধরেই হাটছেন তাঁর পতœী ড. জয়া সেনগুপ্তা। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এ আসন থেকে কবুতর, কুঁড়ের ঘর, নৌকা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তিনি যে বছর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে আসলেন সেবছরই নাছির চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন। এলাকায় একটি কথা রয়েছে এ বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অংশ নাছির চৌধুরী কে ভোট দেয়। তার প্রমান মেলে শত ভাগ হিন্দু ভোটারের সেন্টারের নাছির চৌধুরীর বিজয়। দিরাই-শল্লায় সাম্প্রদায়িক ভোটের প্রমান পাওয়া যায় বিভিন্ন নির্বাচনের কেন্দ্র ভিত্তিক ভোটের হিসাব থেকেই। এবারের নির্বাচনে তিন জন প্রার্থী রয়েছেন দিরাই-শাল্লা আসনে। তিন জনই আওয়ামী লীগের প্রার্থী। নির্বাচনী মাঠে তারা নিজেরাই সভা সমাবেশে বলছেন তারা কেই আওয়ামী লীগ মনোনীত, কেউ শেখ হাসিনার নির্দেশে, কেউ ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান আইজিপির ছোট ভাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী), শেখ হাসিনা সমর্থিত কাঁচি প্রিতীক নিয়ে মাঠে আছেন গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, ঈগল পাখি প্রতীক নিয়ে ডামি প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সচিব মিজানুর রহমান। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ সাম্প্রদায়িকতদার বাতাস আবার কেউ আঞ্চলিকতার বাতাস তুলছেন। সাধারণ ভোটররা মনে করেন কোন বাতাসই কাজে আসবে না। যদি বিএনপির ভোটাররা ভোটে গেলে নৌকাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন নির্বাচন পর্যবেক্ষনের কাজে জড়িত থাকা অনেকে। দিরাই উপজেলায় রয়েছে ৯ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা অপর দিকে শাল্লা উপজেলায় রয়েছে ৪ টি ইউনিয়ন। নৌকা মার্কার প্রার্থী শাল্লা উপজেলার বাসিন্ধা আবার কাঁচি প্রতিকের প্রার্থী দিরাই উপজেলার বাসিন্ধা। দিরাই উপজেলার ভোটাররা আঞ্চলিকতার দোহাই তুললে ভোটের ফলাফল ভিন্ন হতে পারে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগে গ্রুপিং তুঙ্গে উঠেছে। দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ড. জয়া সেনগুপ্তার সাথে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। অপর দিকে শাল্লা আওয়ামী লগের নেতারাও রয়েছে ড. জয়া সেনগুপ্তার সাথে। তবে কমিটির বাহিরের অনেক আওয়ামী লীগ নেতা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আল-আমিন চৌধুরীর সাথে রয়েছেন। মিজানুর রহমানের সাথে আওয়ামী লীগের কোন নেতা কর্মী দেখা যাচ্ছে না। ভোটাররা মনে করেন, দিরাই-শাল্লার নির্বাচনী ফলাফল নির্ভর করবে বিএনপির ভোটারদের উপর।