১৮৬১ সালের রেল আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী রেল লাইনের দুই পাশের ২০ ফুটের মধ্যে রেল সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না, এমনি গরু ছাগলের প্রবেশ ছিল নিষেধ। গরু ছাগল রেল লাইনে ঢুকে পড়লে তা নিলামে বিক্রয় করার বিধানও আছে। একই ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে, রেল লাইনের ২০ ফুটের ভিতর ২৪ ঘন্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এভাবে রেল দূর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেল কর্র্র্তৃপক্ষ মামলা করতে পারেন ও ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনে রেল চলাচলের দিকনির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এমনকি রেলওয়ে অধ্যাদেশ (অবৈধ দখলমুক্ত) ১৯৭৯ অনুসারে রেলের জমি সঠিক ভাবে উদ্ধারও করা হচ্ছে না। উপরের আইনের মত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার রেল লাইনের ইতিহাস এত দীর্ঘ না হলেও এ রেল লাইনে ট্রেন আসা-যাওয়া করছে প্রায় ৮৭ বছর। ১৯৩৬ সাল থেকে শুরু হওয়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার মাছ বাজারের উপর দিয়ে শত শত বার ট্রেন আসা-যাওয়া করলেও রেলের কোন আইন এ বাজারে আসেনি। এ বাজারে ট্রেন লাইনের উপরেই ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত বসে মাছের বড় বাজার। এখান থেকে প্রতিদিন গাড়ি ভরে মাছ চলে যাচ্ছে সিলেট, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। মাছ ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়িত চরম ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন এখানে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় মাছ বেচা কেনা। বেলা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ট্রেন লাইনের উপরেই বসে যায় মাছ বাজার। ট্রেন লাইনের দু’ধার দিয়ে অল্প কিছু জমিতে গড়ে উঠা মাছ বাজারটি ক্রমেই বড় মোকামে পরিণত হওয়ায় ট্রেন লাইনের উপরেই বসে মাছ বাজার। মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিরাপদ স্থানে বাজারটি সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারী সব মহলে ধর্ণা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। আক্ষেপ করে বারবাজার মাছ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবদুল ওহাব জানান, কেনা বেচার সময় হঠাতই শুনি ট্রেনের হর্ন বাজছে, তখনই আমরা সরে যায়। এমনও অনেকদিন হয়েছে ট্রেনের হর্ন শুনতে পাইনি।পাশের একজন শরীরে টাচ করেছে সরে যাওয়ার জন্য ফলে ফলে জীনের ঝুকি নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে রাস্তার পাশে পড়েছি। কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার মাছ বাজারে মাছ কিনতে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী শরিফ বিশ^াস জানান, রেল লাইনের উপর মাছ বাজার না হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে হলে ভাল হতো।আমরা এখানে মাছ কেনার জন্য আসলে অনেক ভয়ে থাকি। কারণ ট্রেন আসার সঠিক সময় আমরা তো আর জানিনা। যে কারণে জীবনের ঝুকি নিয়ে আমাদের ব্যবসা করতে হয়। আপরদিকে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ও এ বিষয়ে আমলে গ্রহন না করে তারা তাদের হাটের খাজনা প্রতিনিয়ত নিয়ে থাকে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার রেল স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার আরিফুর রহমান জানান, আমি এ স্টেশনে নতুন এসেছি রেল লাইনের উপর ঝুকিপূর্ণ বাজার নিয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি এটার সমাধান হয়ে যাবে। উল্লেখ্য চলতি বছরের ৫ জুলাই বারোবাজার মাছ বাজারে ট্রেনে কাটা পড়ে আবদুল খালেক নামের এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছিলেন, প্রতিবছরই বারবাজারের মাছ বাজার রেল লাইনের উপর মৃত্যুরমত কোন না কোন দূর্ঘটনায় ঘটেই থাকে।