সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, ভাইরাসের নতুন একটি সাবভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন.১’ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুততার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এরইমধ্যে ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশে এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে। তবে এতে জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকির পরিমাণ কম। দেড় বছর আগে ভারতে দেখা দেয় ওমিক্রম ওয়েভ। তার পর এই ভাইরাসের আবির্ভাব হয়। ভাইরাসটির নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টে জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকি নিম্নস্তরের এবং বর্তমানে যে টিকা আছে তাতেই সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে। কিন্তু এই শীতে কোভিড ও অন্যান্য সংক্রমণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা- জেএন.১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অতিদ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাবিষয়ক এজেন্সির তথ্য মতে, ল্যাবে পরীক্ষায় বর্তমানে শতকরা প্রায় ৭ ভাগ মানুষের শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুশিয়ারির বিষয়টি বিবেচনা করে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। কারণ করোনার সংক্রমণ সারা বিশ্বকে কতটা বিপর্যস্ত করেছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ছাড়া করোনার প্রভাবে দেশেও ভীতিপ্রদ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকটি খাতে যেমন নেতিবাচক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে, তেমনি মানুষের জীবন-যাপনের স্বাভাবিকতাও বিঘ্নিত হয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, বাংলাদেশ সরকার করোনা পরিস্থিতিকে সাফল্যের সঙ্গেই মোকাবিলা করেছে। তারপর করোনা পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে, প্রতিটি খাতে আবারও গতি ফিরে আসে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, যেহেতু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দেশে ফ্লু, মাঝারি ঠান্ডা এবং নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ বাড়ছে। যে ভাইরাসের কারণে কোভিড হয়, সেটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং অনেক সময় এর কারণে নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হচ্ছে। গত বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্ব জুড়ে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত করেছে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে দেশের সংশ্লিষ্টদেরও তৎপর হতে হবে এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতেও উদ্যোগী হতে হবে। এই বিষয়টিও মনে রাখা দরকার, এর আগে এমন বিষয় বার বার বলা হয়েছে যে, সংক্রমণ কমায় স্বাস্থ্যবিধি পালনে শিথিলতারও কোনো অবকাশ নেই। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদাসীনতা নয়, বরং স্বাস্থ্যবিধি পালনে সবার আরও সচেতন হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত ভিবিন্ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সামগ্রিকভাবে করোনা মোকাবিলায় যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।