আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-২ (কাউখালী-ভান্ডারিয়া-নেছারাবাদ) ৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে ১৪ দলীয় জোটের মনোনীত নৌকা প্রতীকে সাত বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আরেক হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী একসময়ের আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর একান্ত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন মহারাজ ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই এই আসনের নির্বাচনকে ভোটাররা গুরু শিষ্যের লড়াই হিসেবে দেখছেন।
পিরোজপুর ২ আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বাকী ৫ জন প্রার্থীদের কেউ চিনেন না বলে জানিয়েছেন এ আসনের ভোটাররা।
এই ৫ প্রার্থী হলেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মোহাম্মদ জাকির হোসাইন, গণ ফ্রন্টের মোহাম্মদ মাহাতাব উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ আবুল বাশার, বাংলাদেশ কংগ্রেস মোঃ ছগির মিয়া।
সরেজমিনে ঘুরে এবং ভোটারদের সাথে কথাবলে জানাগেছে, বিগত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এ আসনটি মঞ্জু কে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি তার দলীয় প্রতীক সাইকেল নিয়ে সহজেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪দলের শরীক হয়ে তার দলীয় প্রতীক সাইকেল বাদ দিয়ে নৌকা প্রতীক পেয়েও স্বস্তিতে নেই। এবারে নির্বাচনে তার নিজ দলের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। সম্প্রতি কাউখালী উপজেলা জেপি সভাপতি, সহ সভাপতিসহ তিনসহ শতাধিক নেতাকর্মী জেপি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করায় ও সম্প্রতি ভান্ডারিয়া পৌরসভায় নির্বাচনে তার মনোনীত প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় এবং পিরোজপুর দুই আসনে নতুন নেছারাবাদ উপজেলা যুক্ত হওয়ায় ওই উপজেলায় তার সংগঠনের অবস্থান না থাকায় অনেকটা কোণটা হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মী বেশিরভাগই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। ফলে ৩২ বছরের রাজনীতির হিসাব নিকাশে নতুন প্রজন্মের স্মাট বাংলাদেশ গঠনে পরিবর্তনের হাওয়ায় কিছুটা হলেও টেনশনে রয়েছেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
তবে গত ২৯ ডিসেম্বর বরিশালের নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে তার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা উৎসাহ-উদ্দীপনা ফিরে এসেছে।
এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি পিরোজপুরে ৩২ বছর ধরে রাজনীতি করি। তাই এ আসনের মানুষ আমার বাইরে যাবে কেন।
এদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাইকে মনোনয়ন দিতে না পারায় স্বতন্ত্র-ডামি প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনকে গণমুখী ও উৎসবমুখর করতে আহবান জানান। তারই ধারাবাহিকতায় এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন মহারাজ।
কাউখালী-ভান্ডারিয়া-নেছারাবাদ ৩টি উপজেলার প্রায় শতভাগ বর্তমান এবং সাবেক জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সিংহভাগ এবং যুবসমাজকে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের পক্ষে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় নেতা-কর্মীরা এটা মেনে নিতে পারছেন না, বিধায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রার্থীর প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। ফলে হেভিওয়েট এ প্রার্থী বিপুল পরিমাণ জনসমর্থন নিয়ে রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন, কাউখালী নেসারাবাদে উন্নয়নের বৈষম্য দূর করে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ৭ জানুয়ারী উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আমাকে ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আমার বিশ্বাস ইনাশাআল্লাহ।