চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটের মাঠে বিরাজ করছে ককটেল আতঙ্ক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিতই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন- ককটেল আতঙ্কে ভোটার উপস্থিতি কমে যেতে পারে বেশ কয়েকটি এলাকায়। সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার লাভাঙ্গা-সুন্দরপুর, নয়ালাভাঙ্গা, মরদনা, ছত্রাজিতপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ যেন নিত্যদিনের ঘটনা। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে যায় ককটেল বিস্ফোরণ। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। কাউকে উদ্দেশ্যে করে নয়, বরং উদ্দেশ্যহীন এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোর হয় বলে দাবি এলাকাবাসীরা। তারা জানান- প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতেই যেখানে সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। লাভাঙ্গা-সুন্দরপুরের সাদেকুল ইসলাম জানান- প্রতিরাতেই ককটেল বিস্ফোরণ হয়। স্বজনদের নিয়ে খুবই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে তাদের। কখন কী ঘটে যায় এ শঙ্কা সব সময়ই তাড়া করছে। একই এলাকার নজরুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ভোটকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ বেড়ে গেছে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক বিরাজ করছে তাতে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবে কি-না এ নিয়ে সন্দেহ আছে। মরদনা এলাকার ওবায়দুর রহমান জানান- এলাকায় ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এলাকায় ককটেল মজুত করছে দুস্কৃতিকারীরা। র্যাব-পুলিশ সামান্য উদ্ধার করলেও এখনো বেশ কয়েকটি আস্তানায় ককটেল তৈরীর পর মজুত করা হচ্ছে। র্যাব সম্প্রতি লাভাঙ্গা-সুন্দরপুর এলাকা থেকে ৪১ টি ককটেল উদ্ধার করে। এ বিষয়ে র্যাব-৫, রাজশাহীর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করা হয়। ককটেলগুলো নির্বাচনকালীন সহিংসতায় ব্যবহৃত হতো বলেও ধারণা তাদের। আরো ককটেল উদ্ধানে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে জেলা নির্বাচন অফিস, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্ত্বর, জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের পাশে টেনিস গ্রাউন্ডে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ককটেল বিস্ফোরণ রয়েছে চাঁপাইবনাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর আবদুল ওদুদের রাজনৈতিক অফিসের সামনে, বিএনএম প্রার্থী আবদুল মতিনের বাড়িতে, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রহুল আমীনের বাড়িতে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের বাড়ির সামনে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন- ভোট নির্বিঘœ করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারা। সাধারণ ভোটারদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন বলেন আমরা কোন ধরণের কোন শঙ্কায় নেই। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। গোয়েন্দা কাজ করছে। সকলই মিলে সম্বলিত প্রচেষ্টায় আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করবো। কোন ভাবেই নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করার কোন বিষয়ই এ জেলায় ঘটবে না।