শীতে ভরা মৌসুমেও বাজারে সবজির দাম চড়া। শীতের শুরুতে সব ধরনের সবজির দাম কমলেও বিগত কয়েকদিন ধরে দাম বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর মহাখালী, কারওয়ান বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার, বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে রমজানকে সামনে রেখে আগেভাগেই বাড়তে শুরু করেছে ছোলাসহ বিভিন্ন পদের ডালের দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০/৪০ টাকার সিম বাজারে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের শুরুতে ফুলকপির দাম কমে ৩০ টাকা হলেও বর্তমান বাজারে ছোট ফুলকপির দাম ৫০ টাকা। বেগুন কিছুদিন আগেও ৫০/৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। শীতের শুরুতে সবজির দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে। এ অবস্থায় ক্রেতারা বলছেন- শীতে সবজির ভরা মৌসুমে গরম বাজার।
এদিন বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকা প্রতি আঁটি ২০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, খিঁড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহাখালী বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলম বলেন, যে সিম কিছুদিন আগে কিনলাম ৩০/৪০ টাকায়, সেই সিম এখন কিনতে হচ্ছে ৮০ টাকায়। কি অদ্ভুত বিষয়! বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যখন ইচ্ছে বাজার বেড়ে যাচ্ছে। শীতের সময় এত বেশি দামে আগে কখনোই সবজি বিক্রি হতে দেখিনি। শীতের মৌসুমে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও এখন বাজার চড়া যাচ্ছে।
রমজান আসতে এখনও দেরি দুই মাসের বেশি। তবে এরইমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডালজাতীয় খাদ্য পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। একই সঙ্গে ছোলার ডাল, মুগডাল, অ্যাংকরসহ প্রায় সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, যা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুগডালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। একই সঙ্গে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।
ডাল ব্যবসায়ীদের দাবি, ছোলাসহ আমদানি করা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ ডলারের দর বৃদ্ধি।
তবে ক্রেতারা বলছেন, রমজানে দাম বাড়ালে ব্যবসায়ীরা নানান প্রশ্নের মুখে পড়বেন। সেজন্য দু-এক মাস আগেই বাড়ানো শুরু করছেন।
বাজারে গত সপ্তাহ থেকে ব্রয়লার মুরগির দরও কিছুটা বাড়তি। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে। আর ডিমের দর গত সপ্তারে তুলনায় ডজনে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে।
রাজধানীর বাড্ডার একজন মুরগি ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচন ঘিরে আগের তুলনায় মুরগির চাহিদা অনেকে বেড়েছে। এতে এখন বাড়তি দাম দিয়েও চাহিদা মতো মুরগি পাঁচ্ছি না আমরা। মূলত এসব কারণে এখন মুরগির দাম বাড়তি।