দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের শ্যামপুর পূর্ব মধ্যম পাড়ায় শামীম হোসেন (২৮) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবলীগ কর্মীর উপর হামলা, বাড়ি-ঘর ভাংচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকেলে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরার পথে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া ব্রীজের উপর একই গ্রামের বিএনপিকর্মী অহিদুর রহমান, ছবুর, রাশেদ, দেলোয়ার হোসেন, হৃদয়, মনির, মীর হোসেন, শাহীন, রাব্বি ও মজিবুল হক এ হামলা করে ও পরে লোকজন নিয়ে তার বাড়িতে হামলা ভাংচুর করে তার ঘর থেকে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। একই দিন ওই হামলাকারীরা একই গ্রামের ইউনিয়ন আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ হোসেন মোল্লা (৪৫) ও ৮নং শ্যামপুর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামের (১৯) উপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হামলায় আহত ইউনিয়ন আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ হোসেন মোল্লা বলেন, গ্রামের লোকজনকে ভোট কেন্দ্রে যেতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য গেলে উল্লিখিত বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা আমি ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুলের উপর হামলা চালায়। প্রতিবন্ধী যুবলীগকর্মী শামিম হোসেন বলেন, রোববার বিকেলে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পূর্বপাড়া ব্রীজের উপর শ্যামপুর গ্রামের বিএনপি নেতা অহিদুর রহমান, ছবুর, রাশেদ, দেলোয়ার হোসেন, হৃদয়, মনির, মীর হোসেন, শাহীন, রাব্বি ও মজিবুল হক আমার উপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে আমার বাম হাত ভেঙ্গে পেলে। পরে আমার স্ত্রী ও মা গিয়ে আমাকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসলে তারা আরো লোকজন সংগ্রহ করে প্রায় ১শ’ মানুষ মিলে আমার বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় হামলাকারীরা আমার স্ত্রী’র স্বর্ণের কানের দুল নিয়ে যায়। শামীমের মা শাহিদা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ব্রীজের উপর মেরে ফেলছে শুনে আমি ও আমার পুত্র বধূ ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ওই সন্ত্রাসী বাহিনী আমার প্রতিবন্ধী ছেলেকে বেধড়ক মারপিট করছে। পরে আমরা তাদের কাছ থেকে কোন রকম তাকে রক্ষা করে বাড়িতে নিয়ে আসি। বাড়িতে আসার পর আমাদের প্রতিবেশীরা জানায় তারা অনেক মানুষ জড়ো হয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করতে আসছে, এ সময় আমি আমার ছেলেদের নিয়ে ডাকাতিয়া নদী পার হয়ে পাশ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করি। শামীমের স্ত্রী আছমা বেগম বলেন, তারা দলে-দলে লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে প্রথমে বাড়ির ভাউন্ডারী ও পরে আমাদের ঘরে এসে ভাংচুর চালায়। এ সময় আমি তাদের পায়ে ধরে ঘর রক্ষার চেষ্টা করি, কিন্তু তারা আমার কোন আকুতি না শুনে আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে সব ভেঙ্গে ফেলে ও আমার স্বর্ণের কানের দুল নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বাংগড্ডা ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি এয়াকুব আলী মজুমদার ও সাধারন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মহসিন বলেন, আমরা খবর পেয়ে বিষয়টি সাথে-সাথে থানায় অবহিত করি। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আমরা প্রশাসনের কাছে হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই। নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভূক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।