জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ি এলাকায় অসময়ে যমুনার তান্ডবে বসতভিটা-ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে। অসময়ে নদী ভাঙনে আবাদি জমি বসত ভিটা হারানোর মানুষ গুলো শংঙ্কায় বিচলিত হয়ে পড়েছেন। চরআমখাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম লাভলু,মন্ডলপাড়ার পল্লীচিকিৎসক মজিবর রহমান, চুনালীপাড়া আসগর আলী জানান, রাক্ষুসী যমুনা নদী প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে পানি বৃদ্ধির সাথে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর শীত মৌসুমেও ভাঙছে নদী। সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়ার আপেল মাহমুদ বলেন, একসময় আমাদের শতবিঘা আবাদি জমি, বসতিভিটা সব ছিল। সর্বনাশা যমুনার ভাঙনে সব বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি অন্যের জমিতে ঘর উঠিয়ে দিনাতিপাত করছি। দিন মজুরী করে দিনযাপন করছি। আমাদের দুঃখের যেন সীমা নেই। এ বছর যমুনা নদী অসময়ে ভাঙন শুরু করেছে। মাথা গুজার শেষ সম্বলটুকুও বুঝি শেষ হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন,এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আগামী দু এক বছরের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সানন্দবাড়ী বাজার, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা,পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হবে। তারা আরো বলেন,ভাঙন কবলিত এলাকায় আতঙ্কে দিন কাটছে আমাদের। কবে নাগাত সরকার এ অঞ্চলকে ভাঙন রোধে কাজ করে শংঙ্কার হাত থেকে মুক্তি দেবে। তাদের প্রত্যেকের দাবী, ব্যক্তিগত সাহার্য্য চাই না। নদী ভাঙ্গন রোধ চাই। সরে জমিন ঘুরে দেখা যায়, যমুনা নদীর পূর্বপাড় বিগত বছর গুলোতে বর্ষার মৌসুমে পানিবৃদ্ধির সাথে সাথে সানন্দবাড়ির মন্ডলপাড়া, মৌলভীরচর মুন্সিপাড়া, চুনালীপাড়া, চিথুলীয়া,পশ্চিমপাড়া,পাটাধোয়াপাড়া, খোলাবাড়ীসহ বিশাল এলাকা জুড়ে যমুনার নদী ভাঙন ভাঙ্গন দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর অসময়ে শীত মৌসুমে পাটাধোয়াপাড়া, মন্ডলপাড়ার,মৌলভীরচর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে বসতভিটা বাড়ীঘর ফসলীজমি দিনের পর দিন ভঙ্গনের কবলে পড়ে শত শত মানুষ নিঃস্ব হয়ে গৃহহারা হয়ে পড়ছে। ভাঙনের আতঙ্কে কাটছে তাদের দিন। ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ। একসময় যাদের গোলাভরা ধান,পুকুর ভরা মাছ ছিল, এখন তারা নদীর ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। এসব পরিবারের লোকজন জীবন-জীবীকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। শতবিঘা জমির মালিক নিঃস্ব হয়ে জীবন জীবিকার তাগিদে দিন-মজুর,রিক্স-ভ্যান চালক,কেউবা ট্রাকবাসের হেলপার হয়ে বাদুড় ঝুলা দিনকাটছে মানবেতর। এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স তিনি বলেন অসময়ে নদী ভাঙনের খবরে পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করেছি। যাতে দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যবস্থা নেন। এ ব্যাপারে জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সানন্দবাড়ী নদী ভাঙন প্রতি রোধ করতে জরুরী ভাবে ৯০০ মিটার বালি ভর্তি জিওব্যাগ ডম্পিংরের জন্য প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হবে বলে জানান।